ব্যতিক্রম জ্বালানি ও সাধারণ বিমা

গত বছর সব খাতে লোকসান দিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: বিদায়ী বছরের প্রায় সবসময়ই পতন লেগেছিল পুঁজিবাজারে। এ সময়ে একযোগে কমেছে সব ধরনের শেয়ারদর। পুজি বাঁচাতে পোর্টফোলিও পরিবর্তনের পাশাপাশি সমন্বয় করেছেন বিনিয়োগকারীরা। এক খাতের শেয়ার ছেড়ে গিয়েছেন অন্য খাতে। কিন্তু কোনো ফল হয়নি।

গত এক বছরে কোম্পানির বিবেচনায় বিনিয়োগ হিসাব করলে কিছু বিনিয়োগকারী সামান্য লাভবান কিংবা বিনিয়োগকৃত পুঁজি তুলে আনতে পেরেছেন। কিন্তু খাতভিত্তিক বিনিয়োগ হিসাব করলে সাধারণ বিমা এবং জ্বালানি ও শক্তি খাত ছাড়া কোনো খাত থেকেই লাভবান হতে পারেননি তারা।

তথ্যানুযায়ী, ২০১৯ সালের প্রথমে যারা বিনিয়োগ করেছেন বছর শেষে লভ্যাংশ নিয়েও তারা বিনিয়োগকৃত পুঁজি তুলতে পারেননি। অর্থাৎ লোকসান হয়েছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি লোকসান গুনতে হয়েছে পাট খাতের বিনিয়োগকারীদের। বছর শেষে লভ্যাংশ নিয়েও এই খাত থেকে বিনিয়োগকারীদের গড় লোকসান হয়েছে ৪৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। এর পরের অবস্থানে রয়েছে কাগজ ও প্রকাশনা খাত। এই খাতে বিনিয়োগ করে লোকসান হয়েছে ৩৫ দশমিক ৫০ শতাংশ।

এদিকে সিমেন্ট খাতে বিনিয়োগ করে বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের লোকসান হয়েছে ৩২ দশমিক ৫০ শতাংশ পুঁজি। পরের অবস্থানে রয়েছে বস্ত্র খাত। এই খাত থেকে লোকসান হয় ২৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। একইভাবে ট্যানারি খাত থেকে বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের লোকসান হয় ২৯ দশমিক ২০ শতাংশ।

অন্যদিকে প্রকৌশল খাতের শেয়ারে বিনিয়োগ করে বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের মোট পুঁজি থেকে লোকসান দিতে হয় ২৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। অন্যান্য খাতের মতো আর্থিক খাতের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে গড় লোকসান হয় ২৬ দশমিক ১০ শতাংশ। এছাড়া ব্যাংক খাতে বিনিয়োগ করে আট দশমিক ১০ শতাংশ, সিরামিকে ১৭ দশমিক ৪০ শতাংশ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ১৯ শতাংশ, জীবন বিমায় দুই শতাংশ, বিবিধ খাতে ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ, ওষুধ ও রসায়ন খাতে পাঁচ দশমিক ৮০ এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে বিনিয়োগ করে ছয় দশমিক ৬০ শতাংশ লোকসান হয়।

বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা বলেন, বিদায়ী বছরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পতন চলমান ছিল। সে সময় দুর্বল ও মৌলভিত্তি সব ধরনের কোম্পানির শেয়ারদর পতন হয়েছে। যে কারণে সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে বিনিয়োগ করে মূল পুঁজি তুলে আনতে পারেননি বিনিয়োগকারীরা। প্রতি খাত থেকে হয়তো আলাদাভাবে গুটিকয়েক কোম্পানি থেকে কেউ কেউ সামান্য লাভবান হয়েছেন, কিন্তু খাতভিত্তিক বিনিয়োগের গড় হিসাব করলে প্রায় প্রতিটি খাত থেকে বিনিয়োগ তুলে নিতে পারেননি ভুক্তভোগীরা। উল্টো লোকসান গুনতে হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, ‘২০১৯ সালজুড়ে চলমান পতনে বিনিয়োগকারীদের লোকসান ভারী হয়েছে। কারণ অধিকাংশ শেয়ারদর এখন অনেক কম। তবে এই পরিস্থিতিতে যদি বিনিয়োগকারীরা দেখেশুনে ভালোমানের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে পারেন, তাহলে তাদের লোকসান কমে আসবে বলে মনে করি।’

অন্যদিকে মন্দার বাজারে খাতভিত্তিক বিনিয়োগ হিসেবে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হয়েছেন সাধারণ বিমা এবং জ্বালানি ও শক্তি খাত থেকে। সাধারণ বিমায় বিনিয়োগ করে বছর শেষে ৩২ দশমিক ৯০ শতাংশ লাভবান হয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। অন্য খাত জ্বালানি ও শক্তি থেকে বছর শেষে লাভ এসেছে ১০ শতাংশ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০