নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ শনিবার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে এ সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, রাস্তাঘাট এত উত্তপ্ত যে মানুষ কম বের হচ্ছে। এরই মধ্যে স্কুল-কলেজ শনিবার খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অর্থাৎ বাচ্চাদেরও এ সরকার আগুনের মধ্যে পুড়িয়ে মারতে চাচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ফকিরাপুলে বিএনপির খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন রিজভী।
তিনি বলেন, আমরা পাকিস্তান আমলেও গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাটাতাম। অথচ এই সরকার রমজান মাসেও ১৫ দিন স্কুল খোলা রেখেছিল। যেখানে স্কুল সপ্তাহে দুদিন বন্ধ, তার মধ্যে শনিবার স্কুল-কলেজ খোলা রেখে বাংলাদেশ যে অগ্নিবর্ণ হয়ে উঠেছে, সেই আগুনরাঙা বাংলাদেশের মধ্যে এই বাচ্চাদের ঠেলে দেয়া হচ্ছে।
তীব্র তাপপ্রবাহের জন্য সরকারকে দায়ী করে রিজভী বলেন, বাংলাদেশে এখন উত্তপ্ত আগুনের মতো পরিবেশ। এই উত্তপ্ত গরমে মানুষের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। এজন্য একমাত্র দায়ী এই গণবিরোধী সরকার। এরা নদী রক্ষা করতে পারেনি। ভূমিদস্যুরা নদী দখল করে রেখেছে। অন্যায়ভাবে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সরকার কিছুই করছে না। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কয়লা পুড়িয়ে তাপকেন্দ্র করলে দেশের কোনো লাভ হবে না। গাছ, ফসল ও মাছ পুড়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, কুয়াকাটায় তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, বাগেরহাটের রামপালে কয়লা পুড়িয়ে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র করেছে, যার কারণে সমুদ্রপারে নারিকেল গাছে আর নারকেল ধারে না, ফসল হয় না। আমাদের নিঃশ্বাস, আমাদের অক্সিজেন হচ্ছে সুন্দরবন। সেই সুন্দরবনকে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। উজাড় করে দেয়া হচ্ছে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এই দেশে নদী খাল-বিল দিয়ে ভরা। কিন্তু সেই নদী খাল-বিলগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। সারাদেশ গরমে উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে। ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রা মনে হচ্ছে ৪৩ বা ৪৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা। এ রকম গরম বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কখনও পড়েনি। সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূতি হচ্ছে। যে দেশে এত গাছপালা, এত নদী, সেই দেশে এ রকম গরম হওয়ার কথা না। শুধু সরকারের লুটেরা নীতি ও নদী ভরাট করার নীতির কারণে এই পরিস্থিতি হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি নাকি যে কোনোভাবে ক্ষমতা দখল করতে চায়।’ আমরা দখল করতে যাব কেন? দখল তো আপনারা করে রেখেছেন। জনগণ ছাড়া, ভোট ছাড়া। দেশের জনগণ চায় আন্দোলনের মাধ্যমে অতি দ্রুত এ সরকারের পতন হোক।
তিনি আরও বলেন, আপনারা যদি ক্ষমতা না ছাড়েন তাহলে বাংলাদেশের মানুষ না খেয়ে মরবে, গরমে আগুনে পুড়ে মরবে, মানুষ চাল-ডাল চিনি-লবণ পাবে না। দেশে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে মানুষ ধুকে ধুঁকে মারা যাবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, তাঁতি দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।