রাহাতুল ইসলাম: গর্ভাবস্থায় তুলনামূলক বেশিই গরম অনুভ‚ত হয়। বলা হয়ে থাকে গর্ভবতী মায়েরা উচ্চ তাপমাত্রার প্রতি স্পর্শকাতর। ফলে নিজের ও গর্ভের শিশুর জন্য অতিরিক্ত গরম ক্ষতিকর হতে পারে। সুতরাং গরমের সময় তাদের প্রয়োজন বিশেষ যত্ন।
পানি পান
গরমে গর্ভবতী মায়ের শরীরে পানির অভাব দেখা দিতে পারে। এ অভাব পূরণের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে ঠান্ডা পানি পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
আরামদায়ক পোশাক পরিধান
আরামদায়ক, হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরা উচিত, দেহে বাতাস চলাচলে সহায়তা করবে। এ সময় সুতি কাপড় পরিধান করা ভালো। কৃত্রিম কাপড় যেমন পলিস্টার ও সিনথেটিক তাপ শোষণ করে বলে তা পরিহার করাই ভালো।
সানস্ক্রিন লোশন ও সানগ্লাস ব্যবহার
গর্ভাবস্থায় সরাসরি সূর্যালোকে বেশি সময় না থাকাই ভালো। যদি সূর্যালোকে থাকতেই হয়, তাহলে সানস্ক্রিন লোশন ও সানগøাস ব্যবহার করা প্রয়োজন। তাছাড়া মাথাকে সূর্যের তাপ থেকে রক্ষা করার জন্য ছাতা বা টুপি ব্যবহারও করতে পারেন। সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বাইরে না বের হওয়াই ভালো।
নিয়মিত গোসল
গরমকালে দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চাইতে বেশি থাকে। তাই শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রতিদিন গোসল করা প্রয়োজন। তবে যেন ঠান্ডা না লাগে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
হালকা ব্যায়াম
গর্ভাবস্থায় হালকা ব্যায়াম শরীরের জন্য ভালো। তবে কোন ধরনের ব্যায়াম করবেন, তা অবশ্যই ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে
নিতে হবে।
নিয়মিত ডাক্তারের কাছে যাওয়া
গর্ভাবস্থায় নিয়মিত চেকআপে থাকা জরুরি। এ সময় অনেক গর্ভবতী মা অসুস্থবোধ বা বিভিন্ন ধরনের জটিলতার সম্মুখীন হতে পারেন। বিষয়গুলোকে অবহেলা করবেন না।
অল্প করে বারবার খাওয়া
একবারে বেশি না খেয়ে অল্প করে একটু পরপর খাওয়া উচিত। এতে মায়ের বিপাক প্রক্রিয়ার ওপর বেশি চাপ পড়ে না। ফলে অভ্যন্তরীণ পরিপাক ক্রিয়া সহজে কাজ করে।
ভিটামিন ও মিনারেলযুক্ত খাবার খাওয়া
গর্ভাবস্থায় মায়েদের ক্যালসিয়াম, আয়রন, প্রোটিন ও আয়োডিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি। উপাদানগুলো ফলমূল, শাকসবজি, ডাল, ডিম, সামুদ্রিক মাছ প্রভৃতি খাবারে পাওয়া যাবে।
ক্যাফেইনজাতীয় খাবার পরিহার
সাধারণত ক্যাফেইনজাতীয় খাবার রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। আবার কারও ক্ষেত্রে ক্যাফেইনের জন্য বিরক্তিভাব, উদ্বিগ্নতা, অনিয়মিত হƒৎস্পন্দন অথবা ঘুমের সমস্যা হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় ক্যাফেইনজাতীয় খাবার দূরে রাখুন।
কাঁচা বা অর্ধসিদ্ধ খাবার পরিহার
গর্ভাবস্থায় অল্প সিদ্ধ মাংস, কাঁচা ডিম, কাঁচা দুধ এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ কাঁচা ও অপ্রক্রিয়াজাত খাবারের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও পরজীবী জীবাণু থাকতে পারে। তাছাড়া না ধুয়ে শাকসবজি খাওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। অপরিষ্কার শাকসবজিতে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু থাকে, পাশাপাশি আধাসিদ্ধ খাবার খাওয়া থেকেও বিরত থাকা ভালো।