মো. জিয়াউর রহমান: শিশু। মহান সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক প্রেরিত মানব প্রতিনিধি। একটি শিশু একটি মানব, একটি জাতির মুক্তি, একটি রাষ্ট্র, একটি বিশ্ব ও একটি বিশ্বমানবতার প্রতীক। একটি শিশু কোনো পরিবারের বংশধর হিসেবে বিবেচিত হয়; আসলে সে কোনো জাতির বংশধর, আবার বিশ্বমানবের বংশধর। অথচ সব শিশুর পৃথিবীতে একই রকমের সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার থাকলেও দেশ, জাতি ও সমাজভেদে শিশুরা আজ চরম বৈষম্যের শিকার। শুধু বৈষম্য নয়, বেঁচে থাকার জন্য জীবনযুদ্ধের শিকার, দু-মুঠো ভাতের জন্য রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষার শিকার, শিশুশ্রমের শিকার, অপুষ্টির শিকার, শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চনার শিকার, স্বাস্থ্যের অধিকার থেকে বঞ্চনার শিকার, বাসস্থানের অধিকার থেকে বঞ্চনার শিকার, সমাজের নিগৃহের শিকার, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শিকার, দারিদ্র্যের শিকার, মৌলিক চাহিদা বঞ্চনার শিকার, বিশ্বমানবতার অবহেলার শিকার এবং বিশ্বনেতৃবৃন্দের মানবিক ভালোবাসার অবহেলার শিকার।
সৃষ্টির সেরা মানবশিশু গরিব দেশে জš§ নেয়ায় শুধু বঞ্চনা, বঞ্চনা, আর বঞ্চনার শিকার। মানবশিশু আজ সবচেয়ে অবহেলিত, আগামীর যোগ্য উত্তরসূরি আজ চরম অনিশ্চয়তায়, আগামীর ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে আজ অসহায়, ধনীদের অবহেলা আর উপেক্ষিত পাত্র। সভ্য পৃথিবী আজ বড় নীরব, মানবিকতা আজ বড়ই বিপন্ন। ধনীরা ভাবে না, আজকের দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত শিশু ভবিষ্যতে তাদের আলোর পথ দেখাতে পারে, তাদের অভিভাবকরূপে আবির্ভাব হতে পারে। ধনী দেশগুলো ভাবে না, কোনো এক দিন গরিব দেশের শিশুরা তাদের নেতৃত্ব দিতে পারে। ভবিষ্যৎ পৃথিবী তাদের দ্বারা পরিচালিত হতে পারে। বর্তমান বিশ্বের নেতৃবৃন্দের গরিব দেশের কোনো শিশুর দ্বারা মূল্যায়িত হতে পারে। হতে পারে সবচেয়ে অবহেলিত শিশু বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। হতে পারে বিশ্বের সেরা মানবিক ব্যক্তিত্ব, সেরা বিজ্ঞানী। একটি দরিদ্র পরিবারের শিশু আর একটি ধনী পরিবারের শিশু একই সম্ভাবনাময়। কোনো শিশুর সম্ভাবনা কম-বেশি নয়, সমান সম্ভাবনার অথচ ধনী-দরিদ্রের বৈষম্যের প্রভাব প্রথমে শিশুর ওপর আঘাত হানে। ধনী-দরিদ্রের বৈষ্যমের ফলে শিশুদের ওপর কতটা আঘাত হানে, তা গবেষণার আলোচনায় নিয়ে আসা প্রয়োজন। একটি শিশুর ওপর আঘাত ওই রাষ্ট্রের ওপর আঘাত, ভবিষ্যৎ কর্ণধারের ওপর আঘাত, বিশ্বমানবতার ওপর আঘাত, বিশ্বনেতৃবৃন্দের মানবিক অনুভূতির ওপর আঘাত।
বিশ্ব যাদের হাত ধরে পরিবর্তিত হয়ে থাকে, তারা হলেন সৃষ্টিশীল মানবিক মানুষ, মানবিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব, আর সৃষ্টিশীল বিজ্ঞানী। অথচ আজ তাদের অন্তরে গরিব দেশের শিশুরা নেই, তাদের চিন্তায় বঞ্চিত শিশুর কষ্ট নেই, তাদের কর্মকাণ্ডে হতদরিদ্র শিশুর মুক্তি নেই, লাখো চেঞ্জমেকাররা আজ অসহায়, দানব পৃথিবীর কাছে বন্দি, হারার আগেই হার মেনে বসে সফলতার ভাব ধরা সুপার-ডুপার অভিনেতা। একটি গরিব দেশের দরিদ্র পরিবারের শিশু কাকডাকা ভোরে বেরিয়ে যায় খাবারের সন্ধানে, কাজের সন্ধানে, দু-মুঠো ভাতের সন্ধানে, পরিত্যক্ত খাবারের সন্ধানে, ভিক্ষার উদ্দেশে, পরিবারকে দু-মুঠো অর্থ দিয়ে খুশি করার সন্ধানে, একটি ছেঁড়া জামার সন্ধানে, একটি ছেঁড়া প্যান্টের সন্ধানে, এক জোড়া ছেঁড়া জুতোর সন্ধানে, পরিবারে মাকে কিছু দিয়ে সাহায্য করার সন্ধানে, পাথর ভেঙ্গে কিছু উর্পাজন করার সন্ধানে, কোন বিত্তশালীর বাড়ীতে কাজের সন্ধানে, মাকে নিয়ে রাস্তার পাশে বসে ভিক্ষার সন্ধানে। চলন্ত গাড়ির সামনে এসে ছোট্ট অবুঝ শিশুর কোনো কিছুর বিক্রির আকুতি, কখনও এ ধনীদের গাড়ির গ্লাস মুছে রাস্তার ট্রাফিক সিগন্যালে দুটো টাকা উপার্জনের চেষ্টা, বস্তিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে ওঠা, অনিশ্চয়তায় নির্ঘুম রাত আর বেড়ে ওঠা।
এত অনিশ্চয়তার মধ্যেও তারা সুখে থাকে, বেঁচে থাকে, টিকে থাকে, জীবনযাপন করে, দেশকে ভালোবাসে, সমাজের মানুষকে ভালোবাসে, নির্বোধ ধনীকে আপন ভাবে, তার অসহায়ত্বের পাশে দাঁড়ায়, অসুখে সেবা করে, মৃত্যুতে কবর খোঁড়ে, মৃতদেহ স্বযত্নে কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত করে। তব্ওু ধনীদের মন গলে না, দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তাদের কোনো মায়া তৈরি হয় না, তাদের দিকে সহানুভূতির দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখে না, তাদের জন্য ওই অতৃপ্ত হƒদয়ে অনুভূতি জাগে না, তারা যে একই পৃথিবীর একই মানুষ, তা তাদের ভাবনায় আসে না। এর পরও তারা এক বেলা খেয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে সুখের পরিতৃপ্তির হাসি হাসে, ক্ষুধা আর বঞ্চনার মাঝে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সুখী পরিবার। এই ক্ষণপ্রভা সুখও অনেক সময় স্থায়ী হয় না। কখনও পাচারকারীর কবলে পড়ে বা দূরে কোথাও হারিয়ে যাওয়ার ফলে পরিবার থেকে আজীবনের জন্য বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কখনও বা রেললাইনে কাটা পড়ে, অথবা কোনো দুর্ঘটনায় চিরতরে বিদায় নেয় পৃথিবী থেকে। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া হাজার হাজার দরিদ্র শিশুর যেতে হয় কষ্টের অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে।
গরিব শিশু। গরিব শিশুর পিতা। গরিব শিশুর মা। এই নিষ্ঠুর পৃথিবীর নির্যাতিত পরিবার। গরিব শিশুর পিতা কৃষিকাজ, শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রভৃতি কায়িক শ্রম দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার শিশু ও পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দেন। গরিব পিতা তার সাধ্যমতো চেষ্টা করেন তার সন্তানদের আগলে রাখতে। ধনীরা কি গরিব পিতার দিকে কখনও তাকিয়ে দেখেছেন, কতটা জরাজীর্ণ তার শরীর, কতটা দুর্বল তার দেহ, কতটা পুষ্টিহীন তার দেহ, কতটা মলিন তার হাসি, কতটা ভগ্ন তার হƒদয়, কতটা নির্মমতার শিকার তার পরিবার, কতটা অবহেলার শিকার এই সমাজে, কতটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শিকার তার শিশু ও পরিবার। গরিব শিশুর পিতা ধনী দেশে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন, সমগ্র পৃথিবী গরিব অসহায় শিশুর পিতার ভেজা ঘামের শ্রমে পরিচালিত হয়, অথচ মানুষ হিসাবে কোনো মূল্য নেই, মানুষ হিসাবে কোনো মর্যাদা নেই, মানুষ হিসাবে তাদের কোনো অধিকার নেই, শুধু ছলচাতুরী আর বঞ্ছনায় আবদ্ধ তাদের জীবন।
ধনী দেশগুলো তাদের শিশুদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করেছে। তাদের শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিত করেছে, পুষ্টি নিশ্চিত করেছে, বেড়ে ওঠার জন্য সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করেছে, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাসহ উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন, মায়ের গর্ভে একটি শিশু আসার সঙ্গে সঙ্গে তার পরিচর্যার দায়িত্ব নিয়েছেন। একটি শিশুকে সুস্থ, সবল, সুশিক্ষিত, সুনাগরিক, মানবিক ও কর্মক্ষম হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যা প্রয়োজন উন্নত রাষ্ট্রগুলো তা করেছে। তারা প্রতিটি শিশুর ভবিষ্যৎ গুরুত্ব অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছে, যা প্রতিটি শিশুর মৌলিক অধিকার। এজন্য উন্নত দেশেগুলো পৃথিবীবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। কৃতজ্ঞচিত্তে তারা স্মরণীয়, কারণ অন্তত তারা নিজের দেশের শিশুর জন্য একটি উন্নত পরিবেশ দিতে সক্ষম হয়েছে। উন্নত দেশের শিশুর মতো প্রতিটি গরিব দেশের শিশুর একই রকম অধিকার রয়েছে। কিন্তু উন্নত দেশগুলো নিজের শিশুদের বাইরে গরিব দেশের শিশুদের আপন ভাবতে পারেনি, গরিব দেশের শিশুর নিজের সন্তানের মতো ভালবাসতে পারেনি, ধনী দেশগুলো গরিব দেশের শিশুদের প্রতি মানবিকতার সর্বোচ্চ চিহ্ন আঁকতে পারেনি, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গরিব দেশের শিশুর জন্য প্রতিজ্ঞা করতে দেখা যায়নি, গরিব দেশের শিশুদের জন্য ধনী দেশগুলোর কষ্ট পেতে দেখা যায়নি, চোখের কোণে পানি জমতে দেখা যায়নি, ধনী দেশগুলোর নেতৃবৃন্দের গরিব দেশগুলোর শিশুদের দুঃখ কষ্ট দেখার জন্য ছুটে যায়নি, কথার ছলে গরিবদের আশ্বস্ত করেনি। এটা পৃথিবীর অধিবাসীর জন্য দুঃখজনক, কষ্টদায়ক ও মানবিকতার চরম লঙ্ঘন।
মানুষকে নিয়ে ভাবনার সময় নেই, দরিদ্র শিশুর ম্লান হাসিকে বোঝার সময় নেই, দারিদ্র্য মুক্তির জন্য বাস্তবভিত্তিক উদ্যোগ নেই, গরিব দেশের অপুষ্টিতে ভোগা মুখের হাসির দিকে তাকানোর সময় নেই, মুক্তিকামী মানুষকে নিয়ে ভাবনার সময় নেই, বঞ্চিত মানুষের পক্ষে কাজ করার সময় নেই, সত্যকে তুলে ধরার সময় নেই, সত্যকে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-অর্থের ঊর্ধ্বে থেকে নির্যাতিত জাতি ও বঞ্চিত মানুষের পক্ষে সত্য স্থাপনে সাহসী ভূমিকা নেই, মানুষকে মুক্তির জন্য বিনা স্বার্থে কোনো আবিষ্কার নেই।
তাহলে জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার পবিত্র স্থান কি লাইনচ্যুত হয়েছে, নাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিচালনাকারী মানুষগুলো সঠিক পথে নেই। হয়তো একদিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সংস্কার করে আবার নতুন আদলে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হবে। বদলে যেতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্মার্থ ও কার্যক্রম।
বিশ্বনেতৃবৃন্দ কি দেখে না রাস্তার পাশে ফুটপাথে ক্ষুধা ভরা পেটে ঘুমন্ত শিশুর মুখ, রাস্তার পাশে কোনো এক কোণে দুটো ইট দিয়ে তৈরি চুলায় মাটির হাঁড়িতে ক্রন্দনরত শিশুর মায়ের রান্নার আয়োজন, শিশুরা হতে পারে বৈষম্যহীনতার প্রতীক, সকল নেতৃবৃন্দের মতৈক্যের প্রতীক, মানবিক পৃথিবী বিনির্মাণের প্রতীক, সংঘাতহীন পৃথিবীর প্রতীক, মানবিকতা জাগ্রতের প্রতীক, হানাহানিমুক্ত পৃথিবীর প্রতীক, ষড়যন্ত্রমুক্ত পৃথিবীর প্রতীক, শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতীক, বৈষম্যহীন সার্বভৌমত্বের প্রতীক, অখণ্ড পৃথিবীর প্রতীক, বিদ্বেষহীন আচরণের প্রতীক, সত্যকে সত্য বলার সাহসিকতার প্রতীক, মিথ্যাকে মিথ্যা বলার দৃঢ়তার প্রতীক, অসম্প্রদায়িকতার প্রতীক, স্বাধীনতাকামী মানুষের মুক্তির প্রতীক, মানুষ মানুষের জন্য এই সাম্যের গানের প্রতীক, দারিদ্র্য বিমোচনের প্রতীক, মৌলিক অধিকারের প্রতীক, বৈষম্যহীন উন্নয়নের প্রতীক, একটি অখণ্ড বৈষম্যহীন, বর্ডারবিহীন পৃথিবীর প্রতীক, শান্তিকামী মানুষের প্রতীক, মানবিকতার প্রতীক, মহামানবের প্রতীক।
শিশুকে শান্তির প্রতীক হিসাবে বিবেচনা করতে পারলে দেশে দেশে যুদ্ধবিগ্রহ বন্ধ করা সম্ভব। যখনই শিশুর শান্তির কথা ও পারিবারিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নেয়া হবে, তখনই বিবেচনায় আসবে যুদ্ধে একটি শিশুর মৃত্যু বা কোনো ব্যক্তির মৃত্যু, যা কোনো একটি পরিবারের শিশুকে পারিবারিক নিরাপত্তাহীনতায় ফেলে দেবে। কারণ ওই ব্যক্তি কোনো শিশু আদরের পিতা, অন্নদাতা, রক্ষাকবচ। তাই শিশুর প্রতি ভালোবাসা কোনোমতেই যুদ্ধকে সমর্থন করে না, বুলেটের আঘাতে কোনো ব্যক্তির মৃত্যুকে সমর্থন করে না। শিশুর প্রতি ভালবাসা পৃথিবীর অনেক অমীমাংসিত সমস্যার সমাধান দিতে পারে। এজন্য প্রয়োজন মানবিক উদ্যোগ। প্রয়োজন বিশ্বনেতৃবৃন্দের নড়াচড়া, প্রয়োজন ঘুমন্ত পৃথিবীকে জাগ্রত করা।
বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ, জ্ঞানের পবিত্র স্থান, যে জ্ঞান মানুষকে মানবিক করবে, মানুষ বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য নতুন কিছু সৃষ্টি করবে। বিজ্ঞানী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, কৃষিবিদ, মানবিক মানুষ, মানবিক নেতা, সুনাগরিক ও গবেষণার জন্য সৃষ্টি হয়েছিল। আজ পৃথিবীতে হাজার হাজার বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টেকনিক্যাল ও চাকরির উপযোগী দক্ষ জনবল তৈরি করতে সক্ষম হলেও হাজারটা মানবিক মানুষ সৃষ্টি করতে পারেনি। পৃথিবীর লক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় যদি হাজারটি মানবিক মানুষ সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়ে থাকে, তাহলে পৃথিবীর লক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় কি সফল হয়েছে, নাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইট, বালু, সিমেন্ট, কাঠ আর রড দিয়ে তৈরি দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো।
উন্নত দেশগুলো হাজার হাজার বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছে। সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ধনী-দরিদ্র সকল দেশের ছাত্রের অধিকার রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ছাত্রের ঘাটতি থাকলে সেখানে গরিব দেশের ছাত্রের শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ নেই। যদি সুযোগ থাকে তাহলে সেটা অর্থ দিয়ে শিক্ষা গ্রহণের জন্য, যা রীতিমতো জ্ঞানচর্চার পবিত্র স্থান আর মানবিক মানুষ সৃষ্টির কারখানা, তা এখন বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
দরিদ্র দেশ, দরিদ্র পরিবার, দরিদ্র শিশু, দরিদ্র শিশুর পিতা, দরিদ্র শিশুর মাÑসব নামের আগে যদি ‘দরিদ্র’ শব্দ বাদ দেয়া যেত, তাহলে আজ দরিদ্রের কশাঘাত থেকে দরিদ্র মানুষগুলো মুক্তি পেত। তাই দরিদ্র দেশ, দরিদ্র পরিবার, দরিদ্র শিশু, দরিদ্র শিশুর পিতা-মাতার একমাত্র মুক্তির পথ দারিদ্র্য বিমোচন। আর দারিদ্র্য বিমোচনের একমাত্র কার্যকর হাতিয়ার হলো মানবিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব, কোনো অর্থনীতিবিদের গবেষণাগারে গবেষণা বা ডেটা অ্যানালাইসিস নয়। জয় হোক পৃথিবীর সব অসহায় দরিদ্র দেশের, দরিদ্র মানুষের, দরিদ্র শিশুর ও দরিদ্র শিশুর পিতার। জাগ্রত হোক বিশ্বমানবতা।
লেখক ও গবেষক