গরু বিক্রি করতে না পারায় হতাশ খামারিরা

প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা:চুয়াডাঙ্গায় কোরবানিতে অবিক্রীত গরু পালন করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা। তারা জানান, বর্তমানে গরু পালন ব্যয়বহুল হওয়ায় আগামী ঈদ পর্যন্ত সেগুলো পালন নিয়ে তারা বিপাকে পড়েছেন।

আলমডাঙ্গার খামারি বদর উদ্দীন জানান, ঢাকার গাবতলি গরুর হাটে ১৯টি গরু নিয়ে গিয়েছিলেন। ১৭টি গরু বিক্রি করতে পেরেছেন। বাকি দুটি বড় গরু বিক্রি করতে পারেননি। প্রথমে ১১ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছিল। তখন বিক্রি করেননি। পরে আর কোনো ক্রেতা কোনো দাম বলেননি। বাধ্য হয়েই গরু দুটি ফেরত নিয়ে এসেছেন। বাইরে থেকে কোনো ক্রেতা না এলে আগামী ঈদ পর্যন্ত ঢাকা থেকে ফেরত আসা এই গরুগুলো পালন করতে হবে। ঈদ উৎসবে লাভের আশায় পালন করা গরু নিয়ে বিপাকে রয়েছেন বদর উদ্দীনের মতো অনেকে।

আলমডাঙ্গার খাদিমপুর ইউনিয়নের মাজহাদ গ্রামের খামারি হাজ্জাজ বিন তাহাজ জানান, তিনি ১৭টি গরু নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিলেন। মাত্র সাতটি গরু বিক্রি হয়েছে। ১০টি গরু ফেরত এসেছে। তিনি জানান, এ কোরবানিতে তার প্রচুর লোকসান হবে। গরুগুলো  গড়ে আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। 

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মনিরামপুর গ্রামের খামারি মাহফুজ বলেন, তার খামারে ছয়টি বড় গরু  ছিল। যে গরুগুলোর দাম চার লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা। আশানুরূপ দাম না ওঠায় তিনি গরুগুলো বিক্রি করতে পারেননি। আগামী ঈদ পর্যন্ত পালন করলেও লাভ হবে না বলে তিনি জানান।

এমনিতে গোখাদ্যের দাম বেশি।

আর এক খামারি মকবুল হোসেন ৩১টি গরু নিয়ে রাজধানীর আফতাবনগর হাটে গিয়েছিলেন। ঈদের আগের দিন মাত্র সাতটি গরু বিক্রি করতে পেরেছেন। উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় বাকি ২৪টি গরু তিনি বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছেন।

খামারিরা জানান, এক বস্তা ক্যাটল ফিডের বর্তমান দাম এক হাজার ৪০০ টাকা থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা, যা গত বছর বিক্রি হতো এক হাজার ৫০ টাকায়। এখন এক বস্তা গমের ভুসি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৮০০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকায়, যা আগে বিক্রি হতো এক হাজার ২৫০ টাকায়, এক বস্তা ভুট্টার গুঁড়া বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকায়, যা আগে বিক্রি হতো ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়। এক বস্তা চালের কুঁড়া বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়, যা আগে পাওয়া যেত ৫০০ টাকায়। এক বস্তা খৈল বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৫০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকায়, যা আগে বিক্রি হতো সাড়ে তিন হাজার টাকায়।

বেশিরভাগ খামারিরা মনে করছেন, গোখাদ্যের দাম আগামীতে আরও বাড়বে। এতে মধ্যম মানের খামারিদের পক্ষে খামার টিকিয়ে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে তারা মনে করছেন। এছাড়া করপোরেট ব্যবসায়ীদের গড়ে তোলা বৃহৎ ডেইরি খামারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রান্তিক খামারিদের অবিক্রীত গরু নিয়ে টিকে থাকাও কঠিন চ্যালেঞ্জ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০