Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 9:03 pm

গর্ভকালীন খাবারের যত সমস্যা

গর্ভধারণের সময় শরীর ও মনে আসে নানা পরিবর্তন। এরই ধারাবাহিকতায় খাদ্য গ্রহণ ও পরিপাকতন্ত্রের কার্যাবলিতেও কিছু পরিবর্তন আসে। যেমন মর্নিং সিকনেস (সকালবেলা বমি ও বমি-বমি ভাব), গলা-বুক জ্বালা করা, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রভৃতি।

প্রথমবার গর্ভবতী হওয়া নারীদের অধিকাংশই তাদের গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে বমি ও বমি-বমি ভাবে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এমনটা সকালের দিকে বেশি হয় বলে একে ‘মর্নিং সিকনেস’ বলা হয়।

এ সমস্যা কমাতে করণীয়: রাতে ঘুমানোর আগে ভালোভাবে দাঁত ব্রাশ করবেন। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মেছওয়াক বা ভালোভাবে কুলি করে বিভিন্ন ধরনের শুকনা খাবার, যেমন মুড়ি, চিড়া, বিস্কুট, ব্রেড বা টোস্ট খেতে পারেন। একবারে বেশি পরিমাণে না খেয়ে অল্প করে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা পর পর খাবার খান। বেশি গরম খাবার খাবেন না। অতিরিক্ত তেল-চর্বি, মসলাদার খাবার এবং ভাজা, বাসি, টক ও গন্ধযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ভিটামিন বি১ এবং ভিটামিন বি৬-যুক্ত খাবার বেশি বেশি খান।

গলা-বুক জ্বালা বা বুকে ব্যথা থেকে প্রতিকার পেতে: তরকারিতে তেল, ডালডা, ঘি, বাটার, পেঁয়াজ ও মসলা বেশি পরিমাণে দেবেন না। চা, কফি, চকলেট, কোমল পানীয় ও আইসক্রিম খাবেন না। খাবার খাওয়ার অন্তত আধা ঘণ্টা পর পানি খান। খাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা পর বিছানায় যাবেন। আঁটসাঁট পোশাক না পরে ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। এমন বালিশে ঘুমান, যেন পা অপেক্ষা মাথা চার থেকে ছয় ইঞ্চি ওপরে থাকে।

কোষ্ঠকাঠিন্যে প্রতিরোধে করণীয়: রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঈষৎ গরম দুধ খেতে পারেন। দুধ হজমে সমস্যা থাকলে টকদই খেতে পারেন। মৌসুমি ফলমূল, শাকসবজি ও সালাদ বেশি করে খেতে পারেন। অতিরিক্ত তেল-চর্বি ও মসলাযুক্ত খাবার, ভাজা ও ফাস্ট ফুড খাওয়া পরিহার করুন। অল্প অল্প করে বারবার পানি খান। ডাল, বাদাম, শিম ও কাঁঠালের বীজ প্রভৃতি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। ইসবগুলের ভুসি, তোকমা দানা, চিয়া সিড প্রভৃতি ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন। সংসারের টুকটাক কাজ করার পাশাপাশি নিয়মিত হালকা শারীরিক ব্যায়াম করুন।

পিকা: আজেবাজে জিনিস যেমন মাটি, সাবান, বেকিং সোডা, ফ্রিজে জমা বরফ প্রভৃতি খাওয়ার ইচ্ছাকে ‘পিকা’ বলে। গর্ভাবস্থায় পিকার ভাব এলে আচার বা চাটনি খেতে পারেন, চিনিমুক্ত চুইংগাম চিবাতে পারেন। ফলের রসের আইস কিউব চিবাতে পারেন। আয়রন ও ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খান।

মো. নাহিদ নেওয়াজ

পুষ্টিবিদ, ঝিনাইদহ ডায়াবেটিক হাসপাতাল