গর্ভকালে আলট্রাসনোগ্রাম কেন গুরুত্বপূর্ণ

চিকিৎসার সুবিধার্থে চিকিৎসকরা পুরো মাতৃত্বকালীন সময়কে তিন ভাগ করে থাকেনÑপ্রথম ত্রৈমাসিক, দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক ও তৃতীয় ত্রৈমাসিক। প্রতি মাসেই ভ্রƒণ একটু একটু করে বড় হতে থাকে। শুরুতে মাত্র দুটি কোষের সমন্বয়ে তৈরি হয় জাইগোট বা ভ্রƒণ। ২৮০ দিনের মধ্যে এই ক্ষুদ্র কণিকা পরিণত হয় মানবসন্তানে। প্রতিটি ধাপ সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে কি না, তা বুঝতে এখন গর্ভকালে আলট্রাসনোগ্রাম করা হয়।

প্রথম মাস শেষে ভ্রƒণের দৈর্ঘ্য হয় ৩ মিলিমিটার। এ সময় শরীরের অনেকটা অংশজুড়ে হƒৎপিণ্ড থাকে এবং ধীরে ধীরে হƒৎস্পন্দন শুরু হয়?। দ্বিতীয়? মাস শেষে ভ্রƒণের দৈর্ঘ্য হয়? ২ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার। এ সময়? চোখের পাতা, একটি আঙুল তৈরি হয়?। তিন মাসে ভ্রƒণের দৈর্ঘ্য হয় ৫ সেন্টিমিটার।

চতুর্থ মাস শেষে ফিটাসের ওজন ১২৫ গ্রাম এবং দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার হয়। এ সময়? শিশুর যৌনাঙ্গ তৈরি হওয়া শুরু হয়। পঞ্চম মাসে ভ্রƒণটি পেটের মধ্যে নড়াচড?া শুরু করে। ষষ্ঠ মাসে তার চামড?ার নিচে ফ্যাট তৈরি শুরু হয়?, শরীরে ছোট ছোট লোম তৈরি হয়?, মোমের মতো এক ধরনের পিচ্ছিল পদার্থ সারা শরীর আবৃত করে রাখে, যাকে বলা হয় ভার্নিক্স। সপ্তম মাসে বাচ্চার ওজন হয়? ৫০০ গ্রাম। হার্টবিট হয় ১৪০ বিট/মিনিট। অষ্টম মাস থেকে প্রতি সপ্তাহে বাচ্চার ওজন বাড়ে ১-২ পাউন্ড করে। বাচ্চার মাথা মায়ের জরায়ুর নিচের দিকে যেতে শুরু করে। নবম মাসে ওজন ৩ কিলোগ্রাম বা তার বেশি হয়।

আলট্রাসনোগ্রামের সাহায্যে ভ্রƒণের এই স্বাভাবিক বৃদ্ধি হচ্ছে কি না, তা বোঝা যায়। কোনো অস্বাভাবিকতা ধরা পড়লে চিকিৎসা দেয়া হয়।

সন্তান ধারণের চার থেকে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভথলির অবস্থান দেখতে প্রথম আলট্রাসনোগ্রাম করা উচিত। জরায়ুর বাইরে প্রেগন্যান্সি হলে, তা দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব। গর্ভাবস্থার ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে হার্টবিটের উপস্থিতি দেখতে আরেকটি স্ক্যান করা হয?। গর্ভস্থ শিশুর কোনো জš§গত রোগের ঝুঁকি আছে কি না, তা দেখতে এনটি স্ক্যান করা হয়? ১১ সপ্তাহ থেকে ১৩ সপ্তাহ ৫ দিনের মধ্যে।

১৮ থেকে ২৪ সপ্তাহে অ্যানামলি স্ক্যান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ স্ক্যানের মাধ্যমে শিশুর স্নায়ুতন্ত্র, হাড়ের গঠন, পাকস্থলী, মূত্রথলি, কিডনির যথাযথ অবস্থান, হার্টের কোনো সমস্যা থাকলে ধরা যায়। ২৮ থেকে ৩২ সপ্তাহে করা হয় গ্রোথ স্ক্যান বা ডপলার স্টাডি। এতে শিশুর ওজন ও স্বাভাবিক বৃদ্ধি হচ্ছে কি না, তা বোঝা যায়।

বায়োফিজিক্যাল প্রোফাইলের মাধ্যমে গর্ভস্থ শিশুর নড়াচড?া, পানির পরিমাণ এবং আরও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়? দেখা হয়?। ৪ডি স্ক্যান দিয়ে ঠোঁট ও তালুকাটা আছে কি না, তা শনাক্ত করা সম্ভব। গর্ভাবস্থায় যে কারও পানি ভাঙতে পারে, রক্তপাত হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে যে কোনো সময় প্রেগন্যান্সি প্রোফাইল আলট্রাসনোগ্রাম করা হয়।

ডা. সাজেদা রুমানা আহমেদ, কনসালট্যান্ট সনোলজিস্ট, আলোক হেলথকেয়ার লি. কচুক্ষেত, ঢাকা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০