Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 2:53 pm

গর্ভের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ নিয়ে হাইকোর্টের রুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: গর্ভের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় জানা ও তা প্রকাশ বন্ধে নীতিমালা তৈরি বা নির্দেশনা কেন সরকার দিচ্ছে নাÑসে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসানের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত গতকাল এ রুল জারি করেন।

ওই নীতিমালা তৈরি বা নির্দেশনা দিতে সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা কেন ‘অবৈধ ও বেআইনি’ ঘোষণা করা হবে নাÑতা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ।  সে সঙ্গে গর্ভের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় শনাক্তকরণ ও প্রকাশ রোধে নীতিমালা বা নির্দেশনা প্রণয়নে সরকারকে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

স্বাস্থ্য সচিব, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সাত বিবাদীকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

গর্ভের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় শনাক্তকরণ পরীক্ষা বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে গত মাসের শেষ সপ্তাহে এ রিট আবেদনটি করেন আইনজীবী ইশরাত। আবেদনের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন মো.  আবদুল হালিম। রিটকারী আইনজীবী নিজেও শুনানিতে অংশ নেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এমএমজি সারোয়ার পায়েল।

আইনজীবী আবদুল হালিম বলেন, গর্ভের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় শনাক্ত করলে বা লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করলে সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী গর্ভের শিশুর মায়ের ‘রাইট টু লাইফ’ ও ‘রাইট টু ডিগনিটি’ লঙ্ঘন করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে, পরপর দুটি কন্যাশিশুর পর তৃতীয় শিশুটিও যদি কন্যা হয়, সেটি শনাক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই মায়ের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়; অনেক সময় অত্যাচারও সহ্য করতে হয়। তাছাড়া লিঙ্গ পরিচয় শনাক্ত হলে অনেক মাকে গর্ভনাশ করতে

বাধ্য করা হয়। তাতে তার মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়। অনেক সময় মায়ের ওপর শারীরিক-মানসিক অত্যাচার-নিপীড়নের কারণে গর্ভের শিশুটির শারীরিক বৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে জšে§র পর শিশুর বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।’

আবদুল হালিম বলেন, ‘আদালতে আমরা বলেছি, বিশ্বের অনেক দেশেই গর্ভের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় শনাক্তকরণ ও পরিচয় প্রকাশের ক্ষেত্রে নীতিমালা আছে। ভারতেও নীতিমালা করেছে। গর্ভের শিশুটি ছেলে না মেয়েÑতা জানার প্রয়োজন আছে, যদি তা চিকিৎসক মনে করেন, যদি মা অথবা গর্ভের শিশুটির কোনো ধরনের চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এ নিয়ে কোনো নীতিমালা বা নির্দেশনা না থাকায় গড়পড়তা গর্ভের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা হয়।’