গাঁদা ফুলের চাষ করে আর্থিকভাবে সফল হয়েছেন সাতক্ষীরার কৃষক গোলাম মোস্তফা ও আকরাম আলী। দেশি জাতের গাঁদা চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন এ দুই কৃষক। বর্ণিল করেছেন জীবন।
বর্তমানে তারা ফুল চাষের ওপর সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়েছেন। এখানের আবহাওয়া ফুল চাষের জন্য উপযোগী। সরেজমিনে জানা যায়, চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো দেড় বিঘা জমিতে দেশি জাতের গাঁদা চাষ করেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলীপুর গ্রামের কৃষক আকরম আলী ও তালা উপজেলার পাঁচপাড়া গ্রামের কৃষক গোলাম মোস্তফা। প্রথমবারেই সাফল্যের মুখ দেখেছেন তারা।
এ দুই কৃষকের সফলতার পেছনে বেসরকারি সংস্থা উন্নয়ন প্রচেষ্টার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। সংস্থাটির কৃষি কর্মকর্তা নয়ন হোসেন বলেন, সাতক্ষীরার মাটিতে ফুল চাষ হবে কি না, তা নিয়ে প্রথমে আমাদের মধ্যে শঙ্কা ছিল। কিন্তু এখানে ফুল চাষ করে সফলতা এসেছে। কৃষক আকরাম আলী ও গোলাম মোস্তফার উন্নতিতে আরও অনেক কৃষক ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
আকরাম আলী জানান, দেড় বিঘা জমিতে গাঁদা চাষাবাদে ফুলের কাটিং, সেচ, চাষাবাদ ও ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছিল ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা। এক মাসের মধ্যেই চারা গাছগুলো থেকে বেরিয়ে আসে ফুলের কুঁড়ি। এরপর ফুলে ফুলে ভরে যায় তার ক্ষেত। এখন পর্যন্ত ফুল বিক্রি করে আয় করেছেন প্রায় দেড় লাখ টাকা। গাঁদা ফুল পাঁচ থেকে ছয় মাস স্থায়ী হয়। আগামী দু-তিন মাস তার বাগানে ফুল থাকবে। আরও দুই থেকে তিন লাখ টাকা আয় হবে বলে আশা করেন তিনি।
ফুল চাষের এ সাফল্যের গল্প জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ২৫ বছর ধরে ফুল চাষের সঙ্গে জড়িত। গাঁদা যে কোনো মাটিতে চাষ করা যায়। তবে এঁটেল ও দোআঁশ মাটি বেশি উপযুক্ত। ফুল চাষের জমি হতে হবে মাঝারি উঁচু, যাতে বন্যার পানি দাঁড়াতে না পারে। কিন্তু জমিতে সেচ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমার গ্রামে ফুল চাষের উপযোগী জমি ছিল না। তাই আমার বেয়াই গোলাম মোস্তফার পরামর্শে নগরঘাটা মিঠাবাড়ী গ্রামের উত্তরপাড়া মাঠে পাঁচ বিঘা জমি লিজ নিই। পরে আমি আলাদাভাবে দেড় বিঘা জমিতে ফুল চাষ করি।
গোলাম মোস্তফা জানান, সাতক্ষীরার ফুল ব্যবসায়ীরা ক্ষেত থেকে ১৭০-২০০ টাকা হাজার দরে ফুল কিনে নিয়ে যান। প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ হাজার ফুল বিক্রি হয়।
সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পেলে আগামীতে আরও পাঁচ বিঘা জমিতে গাঁদাসহ রজনীগন্ধা, জারবেরা ও গ্ল্যাডিওলাস চাষে আগ্রহ রয়েছে তাদের।
ফারুক রহমান, সাতক্ষীরা