গাংনীতে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে আশঙ্কাজনক হারে

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী (মেহেরপুর): মেহেরপুরের গাংনীতে আশঙ্কাজনক হারে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। চলতি মাসের গত তিন দিনে ১৭ জন রোগীর শরীরে ধরা পড়েছে ডেঙ্গু। এছাড়াও গত তিন মাসে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা চার শতাধিক। হাসপাতালে আলাদা কোনো ডেঙ্গু ওয়ার্ড না থাকায় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন অন্য রোগীরা। তাছাড়া হাসপাতালে ভর্তি রোগীরাও মশারি না টাঙানোর কারণে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা শতভাগ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ বলছে, সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে মাইকিং করা হয়েছে।

জানা গেছে, গত বছর জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৭ জন। আর চলতি বছরে গেল তিন মাসে চার শতাধিক রোগীর শরীরে ধরা পড়ে ডেঙ্গু। এর মধ্যে ২৩১ জন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। বাকিরা চিকিৎসা নিয়েছেন নিজ বাড়িতে। সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় চলতি অক্টোবর মাসের তিন দিনে ২১ জনের রক্ত পরীক্ষা করে পাওয়া গেছে ১৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত। এদের মধ্যে ১৪ জনকে ভর্তি রাখা হয়েছে।

গাংনীর ঝোড়পাড়া গ্রামের আনারুল জানান, কয়েকদিন আগে জ্বর আসে। প্যারাসিটামল ট্যাবলেট সেবনের পরও জ্বর না কমলে রক্ত পরীক্ষা করা হয়। তখন ধরা পড়ে ডেঙ্গু। তাই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাধারণ রোগীদের সঙ্গে রাখা হয়েছে। এতে সাধারণ রোগীরা রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে। যারা অন্য রোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছেন তাদের অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছে ডেঙ্গুতে। তিনি আরও জানান, এ জ্বর আসলে শরীর কেঁপে ওঠে ও চোখ মুখ লাল হয়ে যায়। হাত পায়ের গিরায় গিরায় ব্যথা হয়। বমি বমি ভাব লক্ষ্যণীয়। খাবারে সম্পূর্ণ অরুচি। শরীরে কোনো শক্তি পাওয়া যায় না।

এলাকাবাসীরা জানান, গাংনী উপজেলায় ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ এবং একটি পৌরসভা রয়েছে। স্থানীয় সরকারের এসব প্রতিষ্ঠান মূলত ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি এবং কোন কোন সময় ফগার মেশিন দিয়ে এডিসের লার্ভা ধ্বংসের কাজ করে থাকে। তবে এবারের চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তেমন কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

তবে স্বাস্থ্য বিভাগ গ্রাম পর্যায়ে ডেঙ্গু সচেতনা সৃষ্টি ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের জন্য মাইকিং করেছেন। এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আব্দুল আল মারুফ জানান, গত তিন মাসে বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে আলাদা ডেঙ্গু ওয়ার্ড নেই। তাই ডেঙ্গু শনাক্ত রোগীদের মধ্যে যাদের শারীরিক অবস্থা ভালো তাদের নিজ নিজ বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে। বাড়িতেই তারা চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডেঙ্গু রোগীদের মশারি টাঙিয়ে থাকতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। রোগীরা কথা মানছে না। একটু চাপাচাপি করলে তারা বাড়িতে চলে যাচ্ছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০