গাংনীতে ফিলিং স্টেশনে রিফিল করা হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী (মেহেরপুর): গাংনীর তিনটি সিএনজি ও এলপিজি গ্যাস রিফিল স্টেশন থেকে রিফিল করা হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। আর ওই সিলিন্ডারগুলো মোড়কীকরণ করে বাজারজাত করা হচ্ছে। এতে সরকার ভ্যাটবঞ্চিত হলেও ফায়দা লুটছেন রিফিল সেন্টার ও অসাধু ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে একজন সিলিন্ডার ব্যবসায়ী ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি টিম। সেই সঙ্গে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। তারপরও গোপনে অপর দুটি স্টেশন থেকে রিফিল করা হচ্ছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছেন। তবে সংশ্লিষ্ট স্টেশন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

জানা গেছে, গাংনীর শুকুরকান্দি জামান, ঝিনেরপুর এলাকায় নাজ ও গোপালনগরে রুপক এলপিজি স্টেশন চালু রয়েছে। এলাকার গাড়িতে সিএনজি ও এলপিজি রিফিলের পাশাপাশি গ্যাস সিলিন্ডারও রিফিল করা হয়। রাত যত গভীর হয় ততই ভিড় জমাতে থাকেন সিলিন্ডার ব্যবসায়ীরা। তারা সংশ্লিষ্ট ডিলারদের কাছ থেকে গ্যাস না নিয়ে স্থানীয়ভাবে গ্যাস রিফিল করছেন। পরে রিমোড়কীকরণ করছেন। এতে প্রতি সিলিন্ডার গ্যাসে গ্রাহকদের কাছ থেকে লাভ করছে ১০০ টাকা।

শিশিরপাড়া বাঁশবাড়িয়াসহ এলাকার ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ নাজ ফিলিং স্টেশন, হাটবোয়ালিয়া, মড়কা রাইপুরসহ এলাকার লোকজন ও ব্যবসায়ীরা গোপালনগর রুপক ফিলিং স্টেশন থেকে সিলিন্ডার রিফিল করেন। এ ছাড়া খলিসাকুন্ডি হোগলবাড়িয়া, বামন্দী ছাতিয়ান এলাকার ব্যবসায়ীরা  জামান ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস সিলিন্ডার রিফিল করেন।

পরিবেশ অধিদপ্তর ও দাহ্য পদার্থ বিক্রির ছাড়পত্র না নিয়েই বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে সিলিন্ডার ব্যবসা। ওইসব দোকানে কোনো ফায়ার এস্ট্রিংগুইসার নেই। এরা লোকালি গ্যাস রিফিল করে মোড়কীকরণ করেন যা সাধারণ মানুষ বুঝতে অক্ষম। ইতোমধ্যে গ্যাস ডিলার ও প্রশাসনের কাছে অনেকেই অভিযোগ করলে মাঠে নামেন তারা। শুরু হয় গোপন অভিযান। সিলিন্ডার রিফিল করায় নাজ ফিলিং স্টেশনকে ৪৮ হাজার টাকা ও সিলিন্ডার রিফিল করে বিক্রির অপরাধে তেরাইলের পরশ এন্টারপ্রাইজকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

সোমবার বিকালে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহ-পরিচালক সজল আহমেদ, কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক ও র‌্যাব-১২ ক্যাম্প কমান্ডার এএসপি মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টিম। অভিযানে দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে জরিমানা আদায় করা ছাড়াও এ ধরনের কোনো আইনবিরোধী কাজ করবেন না বলেও অঙ্গীকার করেন তারা।

এদিকে একটি প্রতিষ্ঠানে জরিমানার পর সিলিন্ডার বিক্রি বন্ধ হলেও অন্য দুটি চলছে রমরমা ব্যবসা। গভীর রাতে দুটি স্টেশন থেকে প্রতিদিন সহস াধিক সিলিন্ডার রিফিল হয় বলে স্থানীয়রা জানান। তবে কোনো রশিদ দেয়া হয় না। এমনকি গাড়িতে এলপিজি রিফিল করলেও রশিদ দেয়া হচ্ছে না। একটি ফিলিং স্টেশনে কতটুকু গ্যাস আমদানি হয়েছে এবং কতটুকু বিক্রি হয়েছে তার হিসাব মিলবে না তদন্তে।

হেমায়েতপুর ও রাইপুরের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ডিলারদের কাছ থেকে সিলিন্ডার নিয়ে এসে সরকারের বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি করলে কিছু লাভ হয় না। তারপরও লাইসেন্স বাঁচানোর জন্য তারা এ ব্যবসাটি ধরে রেখেছেন। অথচ যাদের কোনো লাইসেন্স নেই, তারা ডিলারদের কাছ থেকে সিলিন্ডার না নিয়ে লোকালি রিফিল করে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। এটি প্রশাসনের দেখা জরুরি করে দাবি করেন তারা।

জামান ফিলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী জামান ও গোপালনগর রুপক এলপিজি স্টেশনের স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম জানান, তারা কোনো অবৈধ ব্যবসা করেন না। তবে গাড়িতে গ্যাস রিফিল করে রশিদ না দেয়ার ব্যাপারে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহ-পরিচালক সজল আহমেদ জানান, অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এটি চলবে এবং কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০