প্রতিনিধি, গাংনী (মেহেরপুর): মেহেরপুর জেলার গাংনীতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এতে স্বাভাবিক কাজকর্মে ভাটা পড়েছে। গেল তিন দিন হালকা বৃষ্টিপাতের পর সকাল থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু। আধা ঘণ্টা ভারী বর্ষণের পর বৃষ্টির মাত্রা কমলেও তা অব্যাহত রয়েছে। অঝোরে বৃষ্টির কারণে ফাঁকা হয়ে পড়েছে গ্রাম ও শহরের সড়কগুলো। সকালে কাজের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হলেও বৃষ্টিতে আটকা পড়েছেন শ্রমজীবীদের অনেকে। চায়ের দোকানে বসে সময় পার করছেন তারা। ক্ষুদ্র ব্যবসার ওপরেও বৃষ্টির বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বাজারগুলোয় মাছ ও অন্যান্য পণ্য সাজিয়ে বিক্রেতারা অপেক্ষা করলেও ক্রেতাশূন্য অবস্থা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, মেহেরপুর জেলা উঞ্চতম জেলার মধ্যে অন্যতম একটি জেলা। গেল কয়েক বছর আশঙ্কাজনকহারে বৃষ্টিপাত কমেছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে তেমন বৃষ্টিপাতের দেখা মেলেনি। তবে গেল মাসের ১৪ তারিখ থেকে টানা তিন দিন বৃষ্টিপাত হয়েছে। বিগত ১০-১২ বছরের মধ্যে এত বৃষ্টিপাত দেখেনি এ অঞ্চলের মানুষ। এ বৃষ্টির ধাক্কা সামলানোর আগেই গেল ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে তিন দিন ভারী বর্ষণ হয়। এর সঙ্গে গত তিন দিনের বৃষ্টিতে জনজীবনে অচলাবস্থা বিরাজ করছে।
এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় আজ ছাত্রছাত্রী উপস্থিতি অনেক কমেছে। কলেজগুলোর উপস্থিতির চেয়ে প্রাথমিক পর্যায়ের বিদ্যালয়গুলোয় উপস্থিতি অনেক কম। গাংনী সরকারি ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির কারণে গত দু’দিন ছাত্রছাত্রী উপস্থিতিতে কম ছিল। আজ সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে উপস্থিতি খুবই কম। বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় উপস্থিতি প্রায় শূন্য।
কাজের গন্তব্যের জন্য গাংনী কাঁচাবাজারের একটি চায়ের দোকানে অপেক্ষা করছেন আব্দুল করিম নামের এক রাজমিস্ত্রি। তিনি জানান, তার দলে রয়েছে ২৫-৩০ জন মিস্ত্রি ও জোগালে (শ্রমিক)। গত তিন দিন বৃষ্টির কারণে কাজকর্ম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে নির্মাণ শ্রমিকদের আয় কমে গেছে। প্রতিদিনের ইনকাম দিয়ে এসব মানুষের সংসার চলে।
এদিকে ভারী বর্ষণের ফলে পরিবেশ ও কৃষিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে জানান উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সেলিম রেজা। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে এটা ঠিক। কিন্তু প্রয়োজনীয় বৃষ্টির কারণে ভূগর্ভস্থ পানির প্রাপ্যতা সহজ হবে এবং পরিবেশে স্বস্তি ফিরে আসবে।