প্রতিনিধি, গাংনী (মেহেরপুর) :মেহেরপুরের গাংনীতে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে বেওয়ারিশ কুকুরের উৎপাত। গতকাল শুক্রবার চারজনসহ গত এক সপ্তাহে শুধু পৌর এলাকায় কুকুরের কামড়ে শিশুসহ অন্তত ৫০ জন জখম হয়েছেন। পৌরসভা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাকসিন না থাকায় সবাইকে ছুটতে হচ্ছে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে। কুকুর নিধনে আইনগত কোনো অধিকার না থাকায় একমাত্র টিকা নেয়ায় এর সমাধান বলে জানিয়েছেন গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দেয়া তথ্যানুযায়ী গতকাল শুক্রবার চারজন কুকুরের কামড়ে জখম হয়েছেন। রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় এদের কুকুরে কামড় দেয়। তারা হচ্ছেÑপৌরসভার চৌগাছার মুজাহিদ (২), পচা মণ্ডল (৭৫), রাইহান (৬) ও সামিউল (৪)। জখম শিশু ও বয়স্কদের স্থানীয়রা গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন ও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে টিকা নেয়ার পরামর্শ প্রদান করেন।
এছাড়া গত এক সপ্তাহে অন্তত ৫০ জন কুকুরের কামড়ে জখম হয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। হাসপাতালে ও পৌরসভায় কোনো টিকা না থাকায় অনেককেই বাইরে থেকে জলাতঙ্ক রোগের টিকা কিনতে হচ্ছে। আবার কেউ কেউ ছুটছেন সরকারি হাসপাতালে।
গাংনী উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মশিউর রহমান জানান, গত কয়েক দিনে ১২ জনকে কুকুরে কামড় দিয়েছে বলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জানানো হয়েছে। আক্রান্তরা হচ্ছেনÑমানিকদিয়া গ্রামের অনিমা (৫), তোফাজ্জেল আকন (৬৫), মনির (৩৫), আনিচ সরদার (৪৫), নিশিপুরের জাকির শিকদার (২৫), যুবরাজ দফাদার (১৪), সিন্দুরকৌটা গ্রামের মৃধা (২০), আ. কাসেম (৭০), হুমায়েজা (৭), অন্তঃসত্ত্বা রাশেদা বেগম (২৬), মো. তরিকুল ইসলাম (১৬) ও কুলবাড়িয়া গ্রামের আরবি আক্তার (৬)। এরা বর্তমানে মেহেরপুর সদর হাসপাতাল থেকে ভ্যাকসিন নিচ্ছেন।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আবির হাসান জানান, প্রতিদিনই কুকুরে কামড়ানো রোগী আসছেন চিকিৎসা নিতে। কিন্তু স্থানীয়ভাবে কোনো ভ্যাকসিন না থাকায় মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হচ্ছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইদুর রহমান জানান, সরকারিভাবে কুকুরের নির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে এ জেলায় বর্তমানে ২০ হাজারের বেশি কুকুর রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব কুকুরের ৭৫ শতাংশই বেওয়ারিশ।
গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী জানান, কুকুর নিধন করা আইনগতভাবে নিষেধ থাকায় সেটি সম্ভব হচ্ছে না। গেল এক সপ্তাহে কুকুরের আক্রমণের শিকার অন্তত ৫০ জন শিশু ও বয়স্ক নারী-পুরুষ পৌরসভায় ভ্যাকসিনের জন্য এসেছেন। পৌরসভা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা না থাকায় সবাইকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।