Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 6:03 pm

গাংনীতে যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে বালাইনাশক

 

 

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী (মেহেরপুর): মেহেরপুরের গাংনীর কৃষকেরা বছরে তিনটি মৌসুমে সবজি উৎপাদন করেন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সবজির একটি বড় অংশ পাঠানো হয় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে। কৃষি বিভাগ থেকে বিষমুক্ত সবজি চাষের কথা ও পরামর্শ দেয়া হলেও সেটি মানা হচ্ছে না। উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তার খাবার টেবিলে পৌঁছানো পর্যন্ত সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি সার ও বালাইনাশক ব্যবহার করা হয়। তবে কৃষি অফিস বলছে, চাষিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বালাইনাশক ব্যবহার সহনীয় মাত্রায় নিয়ে আসার।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, গাংনী উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৫০০ হেক্টর বাঁধাকপি, ৫৫৫ হেক্টর ফুলকপি, ১১৫ হেক্টর পালংশাক, ১১০ হেক্টর শিম, ১৬০ হেক্টর বেগুনসহ দুই হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজি রয়েছে। সাধারণত রোগবালাইয়ের ধরন বুঝে শাকসবজিতে বিভিন্ন ধরনের বালাইনাশক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মোড়কের গায়ে জমি ও ফসল অনুযায়ী পরিমাপ লেখা থাকে। সে অনুযায়ী তা ব্যবহার করতে হবে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে বালাইনাশক প্রয়োগের পর খাওয়ার জন্য অন্তত এক সপ্তাহ থেকে ১৫ দিন পর ক্ষেত থেকে সবজি তুলতে হয়।

কৃষি বিভাগের এই পরামর্শ মানছেন না কৃষকরা। তারা বিকালে ক্ষেতে বালাইনাশক ছিটিয়ে পরদিন সকালেই সবজি বাজারে নিয়ে আসেন। অপেক্ষমাণকাল না মানায় শাকসবজির সঙ্গে সরাসরি বিষ শরীরে প্রবেশ করছে, যা আমাদের জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে। শুধু ভোক্তা বা ক্রেতা নয়, উৎপাদনের কাজে নিয়জিত কৃষকরাও আক্রান্ত হচ্ছেন নানা ধরনের রোগে। তবুও দেখাদেখি ছাড়াও বিভিন্ন বিষ কোম্পানি ও কীটনাশক বিক্রেতাদের পরামর্শে কৃষকরা বালাইনাশক ব্যবহার করছেন মাত্রাতিরিক্তভাবে।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক এমকে রেজা জানান, এমন কতগুলো বালাইনাশক বা রাসায়নিক পদার্থ আছে, যা শাকসবজিতে স্প্রে করার পর ভালো করে ধুলেও সবজি শতভাগ পরিষ্কার ও নিরাপদ হয় না। ওই সবজি খেলে কিডনি, লিভার, স্তন, ফুসফুস, পাকস্থলী, প্রস্টেট, অগ্ন্যাশয় ও ব্লাড ক্যানসারের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। খাদ্য উৎপাদনের সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের রাসায়নিক ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক নিয়ে সচেতন করতে হবে। অরগানিক উপায়ে খাবার উৎপাদনে গুরুত্ব দিতে হবে। ভোক্তাদেরও সচেতন হতে হবে।

গাংনীর সহড়াবাড়িয়া মাঠে শনিবার সন্ধ্যায় কথা হয় বেগুনচাষি আব্দুর রশিদের সঙ্গে। তিনি দেড় বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। বেগুন ক্ষেতে বালাইনাশক স্প্রে করছিলেন তিনি। পরদিন সকালে বেগুন তুলে বাজারে আনবেন বলে জানান। দুই ধরনের বালাইনাশক ছিটিয়েছেন বেগুন ক্ষেতে। এগুলো ব্যবহারে তেমন ক্ষতি নেই এবং সবাই বালাইনাশক ব্যবহার করছেন বলেও জানান তিনি।

কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ২৫ কাঠা জমিতে শিম চাষ করেছেন। পাঁচ দিন আগে চার ধরনের বালাইনাশক মিশিয়ে ক্ষেতে দিয়েছেন। তার দাবি, বালাইনাশক ক্ষেতে দিলে কোনো ক্ষতি হয় না। রাতে শিশির পড়ে তা ধুয়ে যায়। একই কথা জানালেন যুগিরগোফা গ্রামের সবজিচাষি আবু বকর ও আলম। দুজনই কফি চাষ করছেন।

গাংনী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুর রউফ জানান, বীজ থেকে শুরু করে বীজতলা এবং পরবর্তী অন্য সব পরিচর্যায় বালাইনাশক ব্যবহারের যে ক্ষতিকর দিকগুলো আছে, সে বিষয়ে সচেতন করতে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হচ্ছে। বালাইনাশকের প্যাকেটে একটি ওয়েটিং পিরিয়ড (ব্যবহারের সময়সীমা) লেখা থাকে। অনেক ক্ষেত্রে কৃষক তা যথাযথভাবে মানেন না। তাই উৎপাদন থেকে ভোক্তাপর্যায়ে সবাই সচেতন না হলে নিরাপদ সবজি পাওয়া যাবে না। তাই কৃষক ভাইদের পরামর্শ অনুসরণ করে ফসল ফলানোর জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, বীজ থেকে শুরু করে বীজতলা এবং পরবর্তী অন্য সব পরিচর্যায় বালাইনাশক ব্যবহারের যে ক্ষতিকর দিকগুলো আছে, সে বিষয়ে সচেতন করতে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘বালাইনাশকের প্যাকেটে একটি ওয়েটিং পিরিয়ড (ব্যবহারের সময়সীমা) লেখা থাকে। অনেক ক্ষেত্রে কৃষক তা যথাযথভাবে মানেন না। তাই উৎপাদন থেকে ভোক্তাপর্যায়ে সবাই যদি সচেতন হতে না পারি, তাহলে নিরাপদ সবজি পাওয়া যাবে না। তাই কৃষক ভাইদের প্রতি আমাদের পরামর্শ অনুসরণ করে ফসল ফলানোর জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’

জেলা প্রশাসক কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, অনিরাপদ খাদ্য বাজারজাত বা উৎপাদনের পুরো প্রক্রিয়াটিকে নজরদারির ভেতরে আনতে হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। অনিরাপদ খাবার যাতে কেউ বাজারজাত করতে না পারেন, সেজন্য নিয়মিত মনিটরিং অব্যাহত আছে।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ চুয়াডাঙ্গা কার্যালয়ের নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা সজীব পাল বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে আমরা আইন প্রয়োগের চেয়ে সচেতনতামূলক প্রচারের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। সবজি ইনস্ট্যান্ট টেস্ট (তাৎক্ষণিক পরীক্ষার জন্য) করার জন্য রি-এজেন্ট প্রয়োজন, যা ধাপে ধাপে পেয়ে যাব।

একটি প্রশ্ন। জোট গঠনের প্রক্রিয়ায় এই দুই দল অনেকটা এগিয়ে গেলেও টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছিল। নওয়াজ শরিফ যেই ফর্মুলায় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি সেটিতে রাজি হননি। রোববার পাকিস্তানের থাট্টায় এক র‌্যালিতে ভাষণ দেয়ার সময় বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছিল প্রথম তিন বছর তাদের দিতে এবং পরের দুই বছর আমাকে প্রধানমন্ত্রী হতে। কিন্তু আমি তা মানা করেছি।’

পিপিপি’র মুখপাত্র ফয়সাল করিম কান্দি জিও নিউজকে বলেন, মন্ত্রিত্বের ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কাকে কোন মন্ত্রণালয় দেয়া হবে, তার জন্য শেহবাজ শরিফের বিবেচনার ওপরই নির্ভর করতে চান তারা। তবে জিও নিউজ ক্ষমতা ও প্রশাসনিক কাঠামোর বণ্টন কীভাবে করা হয়েছে, তা নিয়ে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে।

কোনো সূত্রের নাম উল্লেখ ব্যতিরেকেই উদ্ধৃত করে সেখানে বলা হচ্ছে, পিপিপি শেহবাজ শরিফের মন্ত্রিসভায় কোনো প্রতিনিধি রাখবে না। তার বদলে প্রেসিডেন্সিসহ শীর্ষ সাংবিধানিক পদগুলো দখলে রাখবে তারা।