গাংনীতে লোডশেডিংয়ে ৪৬ কারখানা বন্ধ

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী (মেহেরপুর): অব্যাহত লোডশেডিংয়ের মুখে পড়েছে মেহেরপুরের শিল্পকারখানা। অনিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহের কারণে কারখানায় উৎপাদন এসে ঠেকেছে সিকি ভাগে। এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ছোট ও মাঝারি ধরনের অন্তত ৪৬টি শিল্পকারখানা। দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে আরও অন্তত অর্ধশত কারখানা বন্ধ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে পথে বসবে তারা। তবে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বলছে, অচিরেই এর সমাধান সম্ভব হবে।

দু’সপ্তাহ ধরে চলছে লোডশেডিং। অব্যাহত লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে জেলার গাংনী উপজেলার অন্তত ১০৬টি ছোট-বড় ও মাঝারি ধরনের শিল্পকারখানা। সেই সঙ্গে বিপাকে পড়েছে এসব শিল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার শ্রমিক। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়ায় এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ছোট ও মাঝারি ধরনের অন্তত ৪৬টি শিল্পকারখানা। এসব কারখানার মধ্যে রয়েছে হাসকিং ও ক্যাটল অ্যান্ড ফিশ ফিড মিল্স। সেই সঙ্গে বেকার হয়েছে পাঁচ শতাধিক শ্রমিক।

১৬ টাকার দেলোয়ার হাসকিং অ্যান্ড ফিশ ফিড মিলের মালিক দেলোয়ার হোসেন জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় তিনি মিলের কাজ বন্ধ করেছেন। মিলে ১১ শ্রমিক ছিলেন, তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তারা এখন বেকার। একই কথা জানালেন মড়কা বাজারের সাগর চাল কলের মালিক আব্বাছ আলী।

অন্যদিকে যেসব মিলকারখানা চালু রয়েছে, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ায় সেগুলোর উৎপাদন নেমে এসেছে সিকি ভাগে। উৎপাদন কম হলেও প্রয়োজনের তাগিদে শ্রমিক রাখতে হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় তার চাপ পড়ছে গ্রাহক পর্যায়ে।

বামন্দী বাজারের সুইট ফ্লাওয়ার মিলের স্বত্বাধিকারী হাজী মতিয়ার রহমান জানান, বিদ্যুৎ সঠিকভাবে না পাওয়ায় তার মিলের চারটি ইউনিটের একটি ইউনিট সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। উৎপাদন নেমেছে অর্ধেকে। তারপরও শ্রমিকদের মজুরি দেয়া হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। একই কথা জানালেন মুক্তি ফ্লাওয়ার মিলের সোহেল রানা বাবু ও বিসমিল্লাহ অ্যাগ্রো ফিডের লাল্টু মিয়া।

এদিকে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও রয়েছেন সংকটে। গোপালনগরের ব্যবসায় সোলাইমান জানান, গবাদি পশুর খামারি ও মৎস্য খামারিদের সঠিক সময়ে খাবার সরবরাহ করতে পারছেন না তারা। দু-তিন দিন ধরনা দিয়েও খাবার মেলাতে পারছেন না। মিল মালিকরা খাবার উৎপাদন করতে না পারায় এ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।

জোড়পুকুরিয়ার ব্যবসায়ী রুবেল জানান, তার কাছ থেকে বাকিতে অন্তত ৩০ মৎস্যচাষি মাছের খাবার নিয়ে থাকেন। এ সপ্তাহ ধরে মাছচাষিদের কোনো খাবার সরবরাহ করতে পারেননি তিনি।

মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গাংনী জোনাল অফিসের ডিজিএম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই। কয়লা সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে অনিয়মিত। যেখানে প্রয়োজন ১৩ মেগাওয়াট, সেখানে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র তিন মেগাওয়াট। ফলে বিদ্যুৎ বিতরণ স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হচ্ছে না। অনতিবিলম্বে এ সমস্যার সমাধান হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০