গাইবান্ধায় এক কেজি ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ

আবু সাঈদ মাহবুব আল ফারুক, গাইবান্ধা : গাইবান্ধায় চলতি আমন সংগ্রহ অভিযানে এ পর্যন্ত এক কেজি ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। এবারে জেলায় আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছিল সাত হাজার ২৫৪ মেট্রিক টন। গাইবান্ধার সাত উপজেলার ১১টি ক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কথা ছিল। এজন্য প্রতিকেজি ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ টাকা।

জানা গেছে, ধান কাটা মৌসুমের শুরু থেকেই এবারে ধানের মূল্য ছিল বেশ চড়া। ফলে কোনো কৃষকই খাদ্য বিভাগে ধান দিতে আগ্রহী হননি। উপজেলা পর্যায়ে খাদ্য বিভাগে ধান সরবরাহের যে তালিকা প্রণয়ন কমিটি রয়েছে, তাতে তৃণমূল থেকে কোনো কৃষকের নাম আসেনি।

সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের মধ্য ধানঘড়া গ্রামের কৃষক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, এবারে মৌসুমের শুরুতেই ধান বিক্রি হয়েছে সর্বনি¤œ প্রতিকেজি ৩০ টাকা দরে। অপরদিকে সরকারি মূল্য হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৮ টাকা। খাদ্যগুদামে ধান দিতে গেলে আর্দ্রতা পরীক্ষার বিষয়টি রয়েছে। কিন্তু ব্যাপারীদের কাছে ধান বিক্রি করতে আর্দ্রতার প্রশ্ন নেই বা অন্য কোনো ঝামেলাও নেই। এজন্য কোনো কৃষক খাদ্যগুদামে ধান দিতে যাননি।

সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের কোমরনই গ্রামের কৃষক জয়েন উদ্দিন বলেন, ধানের বর্তমান বাজার দর কিছুটা কম। এখন মোটা ধান সর্বনিন্ম সাড়ে ২৭ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবু কৃষকরা খাদ্য গুদামে ধান দিতে আগ্রহী নয়। কারণ খাদ্যগুদাম পর্যন্ত ক্যারিং কস্ট, গুদামের শ্রমিকদের নানা ধরনের ঝামেলা এবং ব্যাংকের মাধ্যমে প্রাপ্ত টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা প্রভৃতি কারণে কৃষকরা খাদ্যগুদামমুখী হচ্ছেন না। তাছাড়া ব্যাপারীরা বাড়ি থেকেই ধান কিনে নিয়ে যান নগদ টাকায়।

অপরদিকে বড় বড় কৃষক মূল্য বেশি পাওয়ার আশায় ধান মজুত করে রাখছেন। কারণ তারা জানেন বর্তমান দর থাকবে না। কিছুদিনের মধ্যেই দাম বাড়বে। ফলে জেলার ১১টি খাদ্যগুদামের কোনোটিতেও এক কেজি ধানও সংগ্রহ করতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অন্তরা মল্লিকের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ধান সংগ্রহ করতে না পারলেও এরই মধ্যে চাল সংগ্রহে অনেকটা সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এবারে জেলায় ৯ হাজার ২৯১ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছে। এজন্য ৪৩৮টি অটোমিল এবং হাস্কিং মিল মালিকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছে। এরই মধ্যে পাঁচ হাজার ২৪ মেট্রিক চাল সংগৃহীত হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে অবশিষ্ট চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা পোষণ করেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০