নিজস্ব প্রতিবেদক: আগেরবার ঢাকায় বসে সিসি ক্যামেরায় অনিয়ম দেখে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দিলেও এবারের ভোটচিত্রে সন্তোষ জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। গতকাল ওই আসনে পুনঃভোট শেষে তিনি ঢাকায় নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের বলেছেন, সেখানে পুলিশ ও প্রশাসন নিরপেক্ষ ছিল, ভোটও ভালো হয়েছে।
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৫ আসনটি শূন্য হয়। সেই আসনে গত ১২ অক্টোবর উপনির্বাচনে সম্পূর্ণ ইভিএমে ভোটগ্রহণ হচ্ছিল। তবে সিসি ক্যামেরায় পুরো আসনের এক-তৃতীয়াংশ কেন্দ্রে অনিয়মের দৃশ্য দেখে মাঝপথে ঢাকা থেকে নির্বাচন বন্ধের নির্দেশ দেয় ইসি। এমন ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই প্রথম।
এরপর গতকাল বুধবার আসনটিতে আগের প্রার্থীদের নিয়েই পুনঃভোট হলো। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলে ইভিএমে।
কনকনে শীতের মধ্যে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম হলেও প্রার্থী, ভোটার, নির্বাচন কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের ভূমিকার প্রশংসা করেন সিইসি। তিনি বলেন, ‘এবারের ভোটের শুরুতেও পরিবেশ সুন্দর ছিল, সমাপ্তিটাও চমৎকার হয়েছে। সব মিলিয়ে শান্তিপূর্ণ, সুশৃঙ্খলভাবে সুন্দর ভোট হয়েছে। সেদিক থেকে নির্বাচনটা সফল হয়েছে।’
হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ইভিএমে ধীরগতি ছিল না, কোনো অভিযোগও উত্থাপিত হয়নি। ভোটার উপস্থিতি গড়ে ৩৫ শতাংশের কম-বেশি হতে পারে। চূড়ান্তভাবে পরে জানা যাবে।
ইভিএমে ভোট হওয়ার পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা থাকায় স্বচ্ছ নির্বাচনে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা থাকবে কিনা, সে সিদ্ধান্ত এখনও নেয়নি কমিশন।
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘ইলেকটোরাল গভর্ন্যাস ও সিসি ক্যামেরা একটা নতুন সংযোজন। সিসি অনেক তীক্ষè ও কার্যকর। ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম হলে সচেতন থাকে সবাই, কেন্দ্রের ভেতরে-বাইরে আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সুষ্ঠু ভোটে সিসি ক্যামেরা ইতিবাচক।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, জেলা প্রশাসন পুলিশ ও আমাদের কর্মকর্তারা পেশাদারিত্ব দেখিয়েছেন, নিরপেক্ষভাবে কাজ করে দেখিয়েছেন। এখানে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এটা আমাদের সক্ষমতা, জাতীয় সংসদের নির্বাচনে সমৃদ্ধ করবে। মাঠে প্রশাসন পুলিশ কর্মকর্তা তাদের ওপর আমাদের নজরদারি থাকবে।’
১২ অক্টোবর ভোটের দিন অনিয়মে জড়িত শতাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগে চিঠি দিয়েছিল কমিশন। ৬ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর এক মাসের মধ্যে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়ে কমিশনকে জানানোর কথা রয়েছে। এক মাসের মধ্যে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনাÑজানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘আমাদের তরফ থেকে নির্দেশনা দিয়েছি। সে বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে, এখনও কোনো উত্তর পাইনি। ফলোআপ করব আমরা। চিঠি পেতেই সময় লাগে। দুই তিন মাস ওয়েট করতে পারেন।’