জাতিসংঘের অধিবেশনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট
শেয়ার বিজ ডেস্ক: তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশনের প্রথম দিনের ভাষণে বলেছেন, গাজায় জাতিসংঘ ও পশ্চিমাদের মূল্যবোধের মৃত্যু ঘটছে। তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, ৭০ বছর আগে হিটলারকে যেভাবে থামানো হয়েছে তেমনি নেতানিয়াহু এবং তার হত্যার নেটওয়ার্ককেও অবশ্যই থামাতে হবে। খবর: আল জাজিরা।
জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশনের প্রথম দিন গাজার যুদ্ধে জাতিসংঘ ও পশ্চিমাদের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুসলিম বিশ্বের নেতারা। গাজা যুদ্ধ শুরুর পর জাতিসংঘের প্রথম অধিবেশনে, মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের বক্তব্যে প্রাধান্য পায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিস্ক্রিয়তা।
এরদোয়ান তার ভাষণে জাতিসংঘকে উদ্দেশ্যে করে বলেছেন, বিশ্বে শান্তি এবং ন্যায়বিচার পুন:প্রতিষ্ঠিত করার আশা নিয়ে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা হলেও গত কয়েক বছরে জাতিসংঘ তার প্রতিষ্ঠাকালীন লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে এবং ক্রমান্বয়ে একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার শুধু নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্য দেশের হাতে ছেড়ে দেয়া যেতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন এরদোয়ান। পাশাপাশি গাজায় বিপুলসংখ্যক নিরীহ মানুষের প্রাণহানির কথা তুলে ধরে জাতিসংঘ ও পশ্চিমা বিশ্বের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলের হামলাকে সবচেয়ে বর্বর ও জঘন্য আগ্রাসন হিসেবে অভিহিত করেছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। যুদ্ধের প্রায় এক বছর পর এসেও ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের কথা বলা অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন কাতারের আমির। থানি ইসরায়েলের আগ্রাসন থামাতে না পারার ব্যর্থতা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য একটি বড় লজ্জাজনক ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার কারণে বৈশ্বিক নিরাপত্তা নিয়ে জোরালোভাবে সতর্ক করে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ বলেছেন, বৈশ্বিক নিরাপত্তা কখনো এত বিপদাপন্ন হয়নি। বিশ্বব্যাপী জাতিংসঘের ওপর আস্থাও বর্তমানে পতনের মুখে। এছাড়া গাজা ধ্বংসের পাশাপাশি জাতিসংঘের আদর্শও ধ্বংস হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন জর্ডানের বাদশাহ। এদিকে গাজার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি আশপাশের পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাধারণ অধিবেশনে দেয়া ভাষণে গুতেরেস বিশ্বকে সতর্ক করে বলেছেন, এরই মধ্যে লেবানন দ্বিপক্ষীয় হামলায় বিপর্যস্ত। তাই লেবানন যদি আরেকটি গাজায় পরিণত হয় তবে সে ক্ষতি বহন করা বিশ্বের পক্ষে সম্ভব হবে না।
গুতেরেস মনে করনে, গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের সনদ বা চুক্তি হিসেবে পরিচিত ইউএন চার্টার্ড ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে পদক্ষেপ নেয়ার কোনো বিকল্প নেই। এসময় গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর ও জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান গুতেরেস।