শেয়ার বিজ ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে ইসরায়েল। একই সঙ্গে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে চালানো হামলায় যুদ্ধাপরাধ করেছে হামাসসহ ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনগুলোও। জাতিসংঘের মানবাধিকার পর্ষদের এক তদন্ত প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। খবর: আল জাজিরা।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় গত বুধবার জাতিসংঘের মানবাধিকার পর্ষদের অধিবেশনে ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় সংঘটিত ঘটনা নিয়ে ওই প্রতিবেদনের ওপর আলোচনা হয়। এ-সংক্রান্ত তদন্তে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দায়ী।
পর্ষদের চেয়ারপারসন নাভি পিল্লাই বলেন, ইসরায়েল জোর করে গাজার প্রায় পুরো জনগোষ্ঠীকে ছোট আবদ্ধ এলাকায় ঠেলে দিয়েছে, যা অনিরাপদ এবং বসবাসের অযোগ্য। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ব্যাপক ধ্বংসক্ষমতার অস্ত্রের উদ্দেশ্যমূলক ব্যবহার দৃশ্যত বেসামরিক জনগোষ্ঠীর ওপর ইচ্ছাকৃত ও সরাসরি হামলাই ছিল। একই সঙ্গে ইসরায়েলে হামলার সময় হামাসসহ অন্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনগুলোর যোদ্ধারাও যুদ্ধাপরাধ করেছে বলে জানান নাভি পিল্লাই।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭১ জন। এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৩৭ হাজার ৩৯৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সাড়ে ৮৫ হাজারের বেশি।
এছাড়া ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি স্বীকার করেছেন, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূল করা যাবে না। এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেছেন। তার এই মন্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্যে গাজায় প্রায় আট মাস ধরে যে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল, সেটির লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না দেশটি। এছাড়া আইডিএফ মুখপাত্রের এমন মন্তব্যে গাজায় যুদ্ধ পরিচালনা নিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের মধ্যে আরও উত্তেজনার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়া লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ইসরায়েল। এ-সংক্রান্ত পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। ইসরায়েলের বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর লেবানন সীমান্তে ইসরায়েলি বাহিনী ও হিজবুল্লাহর যোদ্ধাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটছে। তবে এ সংঘাত এখন সর্বাত্মক যুদ্ধে রূপ নিতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইসরায়েল ও লেবানন সীমান্তের উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা আমোস হোচস্টেইনকে ইসরায়েল ও লেবাননে পাঠান।
