শেয়ার বিজ ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায় দেখা দিয়েছে তীব্র মানবিক সংকট। এমন অবস্থায় গাজার অর্ধেক মানুষ ‘অনাহারে’ আছে বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। এমনকি গাজায় বর্তমানে যে পরিমাণ সাহায্য ঢুকছে, তা প্রয়োজনের খুবই অল্প বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। খবর: আল জাজিরা।
ভূখণ্ডটিতে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা প্রায় সাত মাস ধরে চলা নির্বিচার এই হামলার জেরে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এরই মধ্যে ভেঙে পড়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার জনসংখ্যার আনুমানিক ২৩ লাখ মানুষের অর্ধেক অনাহারে রয়েছে।
ডব্লিউএফপি প্রতি মাসে গাজায় ১০ লাখের বেশি মানুষকে খাদ্য সহায়তা করছে। সংস্থাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক পোস্টে বলেছে, তারা খাদ্য সহায়তা করলেও বাস্তবিকভাবে সহায়তার প্রয়োজন এতটাই তীব্র যে তাদের এই ধরনের প্রচেষ্টা ‘প্রয়োজনের তুলনায় সাগরে কেবল একটি ফোঁটার মতো।’ অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন বলেও জানিয়েছে জাতিসংঘের এই খাদ্য ত্রাণ সংস্থাটি।
এর আগে গাজার ফিলিস্তিনিরা ‘দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে’ রয়েছে বলে গত মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)। জাতিসংঘের এই সংস্থাটি সেসময় জানায়, গাজার মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। এই পরিস্থিতিতে গাজায় ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সহায়তা বিতরণ করাই হচ্ছে সবচেয়ে কার্যকর ও নিরাপদ উপায়। গাজা উপত্যকায় সহায়তার নিরাপদ, নিরবচ্ছিন্ন ও টেকসই প্রবেশাধিকার এখন জীবন ও মৃত্যুর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হামলায় প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
এদিকে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বৃদ্ধি করতে গত কয়েক সপ্তাহে ইসরায়েল উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন মানবাধিকার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত ডেভিড স্যাটারফিল্ড। কিন্তু যেহেতু ভূখণ্ডটি দুর্ভিক্ষে পতিত হওয়ার ‘উচ্চ ঝুঁকিতে’ রয়েছে, তাই দুর্ভিক্ষ আটকাতে সেখানে দ্রুত আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।