শেয়ার বিজ ডেস্ক: ক্রমবর্ধমান সংঘাতের কারণে ফিলিস্তিনিরা রাফায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হলে গাজায় নাগরিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে পারে বলে জাতিসংঘের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সতর্ক করেছেন। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার আগে রাফায় তিন লাখের কম মানুষ ছিল। বর্তমানে সেখানে ১৩ লাখ মানুষ অবস্থান করছেন। খবর: ভয়েস অব আমেরিকা।
অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলের জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়ের প্রধান অজিথ সুংহায়ে বলেছেন, এলাকাটি পরিপূর্ণ হয়ে আছে। এখনে কোনো জায়গা নেই। খাবার নেই। মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে আছে। এখানে নাগরিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে, নাগরিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে পারে।
অজিথ সুংহায়ে গাজায় দায়িত্ব পালন শেষে তার কর্মস্থল জর্ডানের আম্মানে ফিরে এসেছেন। গত শুক্রবার ভিডিও লিংকের মাধ্যমে সাংবাদিকদের জানান, তিনি খান ইউনিসে অনেক মানুষ দেখতে পেয়েছেন, যারা ব্যাপক ইসরায়েলি বোমা বর্ষণ ও প্রচণ্ড লড়াইয়ের মধ্যে বসবাস করছেন। তারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। বর্তমান পরিস্থিতি বিপর্যয়কর। খান ইউনিসে এখন যা ঘটছে, এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে অবস্থার উন্নতি না হলে, বাস্তুচ্যুত মানুষগুলোকে আবার সরে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
তবে পালিয়ে যাওয়ার জন্য আর খুব বেশি জায়গা নেই বলে জানান তিনি। অজিথ সুংহায়ে বলেন, রাফার একদিকে ভূমধ্যসাগর, অন্যদিকে মিশর সীমান্ত। খান ইউনিস এবং অন্যান্য জায়গা থেকে যদি বিপুলসংখ্যক মানুষ সেখানে স্থানান্তরিত হয়, তবে অবশ্যই একটি বিশাল বিপর্যয় সৃষ্টি হতে যাচ্ছে।
ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষ বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়ায় অনেক মানুষ আশ্রয়ের জন্য রাফায় এসেছেন। তিনি বলেন, তাদের আর কোনো বিকল্প ছিল না। সেখানকার সড়কের ওপর ও নর্দমার আশপাশে চরম হতাশাজনক পরিস্থিতিতে থাকা লোকজনের বর্ণনা দেন তিনি।
গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, হামাসের হামলার জবাবে ইসরাইল গাজায় অভিযান শুরু করার পর থেকে ২৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে; আর আহত হয়েছে অন্তত ৬৪ হাজার ৪০০ জন। ওই হামলার সময় হামাসের হাতে ইসরাইলের কমপক্ষে ১ হাজার ২০০ লোক নিহত হয়। এছাড়া ২৪০ জনকে জিম্মি করে হামাস। সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তির সময় কিছু ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়া হয়।
গত তিন মাসে অনেক হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্র ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর ব্যাপক বোমা হমলার শিকার হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, গাজার ৩৬টি হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রের মধ্যে ১৪টি আংশিকভাবে চালু রয়েছে।