শেয়ার বিজ ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজা নগরীর একটি বিদ্যালয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় নারী ও শিশুসহ শতাধিক ব্যক্তি নিহত, আহত হয়েছেন আরও অনেকে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানান, গাজার ওই বিদ্যালয়ে উদ্বাস্তু পরিবারগুলো সাময়িকভাবে আশ্রয় নিয়েছিল। খবর: আল জাজিরা।
গাজার গণমাধ্যম দপ্তরের প্রধান ইসমাইল আল-থাওয়াবতা বলেন, হামলায় ইসরায়েলি বাহিনী দুই হাজার পাউন্ডের তিনটি বোমা ব্যবহার করেছে। বিদ্যালয়টিতে উদ্বাস্তুরা আশ্রয় নিয়েছিলেন। এটি ইসরায়েলি বাহিনী জানত। এরপরও সেখানে হামলা চালানো হয়েছে।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা বলেছে, গতকাল শনিবার ভোরে গাজা নগরীর দারাজ এলাকার আল-তাবিন বিদ্যালয়ে ওই হামলা হয়। ইসরায়েলের তিনটি বোমা বিদ্যালয়ে আঘাত হানে। এ এক ‘ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ’। ফজরের নামাজের সময় চালানো ওই হামলায় বিদ্যালয় ভবনে আগুন ধরে যায়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী, শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা রয়েছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দাবি, হামাসের সদস্য ও কমান্ডাররা ওই বিদ্যালয়কে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করছিলেন। তারা সেখানে লুকিয়ে থাকতেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বেশ কয়েকবার গাজার বিভিন্ন স্কুলে বোমা হামলা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে গাজায় একটি বিদ্যালয়ে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হন। আহত হন ৪০ জনের বেশি। পূর্ব গাজা সিটির সাজায়া এলাকায় বিদ্যালয়টিতে ওই হামলা হয়। বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা ওই বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তখনও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি ছিল, তাদের বিরুদ্ধে হামলার ষড়যন্ত্র করতে কমান্ডার ও গুপ্তচরদের লুকিয়ে রাখার জন্য বিদ্যালয় ভবনটি ব্যবহার করছিলেন হামাস যোদ্ধারা।
মূলত গাজার বিদ্যালয়গুলো এখন যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত মানুষে ঠাসা। ইসরায়েলি সেনারা এসব স্কুল লক্ষ্য করে অব্যাহত হামলা চালাচ্ছে। তারা বলছে, হামাস সামরিক অভিযান পরিচালনা কেন্দ্র হিসেবে এ ধরনের বেসামরিক অবকাঠামো ব্যবহার করছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলি সেনাদের তথ্যমতে, হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। এ ছাড়া ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়, যাদের অনেকে এখনও গাজায় আছেন। জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।