গাজীপুরে গাড়ি পোড়ালেন আন্দোলনরত শ্রমিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বেতন বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় একটি গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছেন। ভাঙচুর করেছেন অর্ধশতাধিক গাড়ি। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১টায় উপজেলার চন্দ্রা পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।

কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা মো. রায়হান বলেন, রাস্তার পাশে থেমে থাকা একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন শ্রমিকরা। এমন খবর পেয়ে যানজট পেরিয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই গাড়িটি পুড়ে যায়।

গাজীপুর শিল্প পুলিশ ও কারখানার শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, বেতন বাড়ানোর দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে গাজীপুরে নগরের কোনাবাড়ী, তেলিচালা, মৌচাক, শফিপুর, চন্দ্রা পল্লিবিদ্যুৎ এলাকার পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ-মিছিল কর্মসূচি পালন করছিলেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ বেশ কয়েকটি কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে বেলা ১টায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা আবার জড়ো হয়ে মৌচাক এলাকা থেকে বিক্ষোভ করতে করতে চন্দ্রার দিকে যান। পথে পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ওপর থেমে থাকা একটি ব্যক্তিগত গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন তারা। গাড়িটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এ সময় তারা অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করেছেন। চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় কয়েকটি ভবনের গ্লাসও ভাঙচুর করেন তারা। চন্দ্রা পল্লী বিদ্যুৎ ইকো টেক্সটাইল কারখানার পাশে থাকা ব্যাংক এশিয়ার একটি এটিএম বুথও ভাঙচুর করেন শ্রমিকরা।

শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে সকাল থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে থেমে থেমে যানবাহন চলেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বেলা ২টায় চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় শ্রমিকরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন।

গাজীপুর জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. সুলতান উদ্দিন সরকার বলেন, তাদের ৫০টি থেকে ৬০টির বেশি গাড়ি ভাঙচুর করেছেন শ্রমিকরা। অনেকেই মোবাইল ফোনে ভাঙচুরের তথ্য দিচ্ছেন। ভাঙচুর করা বেশিরভাগ গাড়িই যানজটে আটকে রয়েছে, এগুলো বাসস্ট্যান্ডে এলে প্রকৃত সংখ্যা আরও বাড়বে।

কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ বলেন, একটি জিপ গাড়িতে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা আগুন দিয়েছেন। শ্রমিকরা সকাল থেকে তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন। এতে সড়কে যান চলাচলে ধীরগতি দেখা যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা, মহানগর ও শিল্প পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ময়নুল হক বলেন, শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কয়েক দফায় কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। প্রতিটি পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

গত সোমবার থেকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক, সফিপুর, তেলিচালা ও কোনাবাড়ী এলাকায় বেশ কয়েকটি কারখানা শ্রমিকরা মূল বেতন বাড়ানোর দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে আসছেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০