গাজীপুরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বরইয়ের আবাদ বেড়েছে

আবিদ হোসাইন, গাজীপুর: দেশে টক-মিষ্টি বরইয়ের চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুণ। গাজীপুরে বেশ কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে বরইয়ের আবাদ বেড়েছে। শুরুতে আপেল কুল ও বাউকুলের ব্যাপক চাষাবাদ ছিল। সময়ের ধারাবাহিকতায় বউ সুন্দর ও টক বরই চাষেও চাষিরা ঝুঁকছেন। কম খরচে অধিক ফলনে বরইয়ের উৎপাদন চাষিদের বাণিজ্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় এখন নিজ উদ্যোগে অনেকেই বরই বাগান গড়ে তুলছেন।

এ বছর গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কয়েকটি গ্রামে বাণিজ্যিক বরই আবাদ হয়েছে। যা ঢাকা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে। মিষ্টি বরইয়ের মতো টক বরইয়ের বাজারমূল্য পাচ্ছেন চাষিরা। ফলে টক বরইয়ের বাণিজ্যিক চাষও শুরু হয়েছে। ফাল্গ–ন মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত গাছে বরইয়ের ফলন আসবে বলে জানিয়েছেন বরই চাষে সংশ্লিষ্টরা।

শ্রীপুরের উজিলাবো গ্রামের বাগান মালিক কবির মৃধা বলেন, প্রায় ১০ বছর ধরে টক ও আপেল কুলের চাষ করছেন। শ্রীপুরের আবহাওয়া ও মাটি বরই চাষের জন্য উপযোগী। যাদের চাষ করার মতো জমি রয়েছে তারা বরই চাষ করলে তার মতো সফল হবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

আরেক ব্যবসায়ী জামিল আহমেদ জানান, এ বছর কেওয়া গ্রামে একটি বরই বাগান কিনেছেন ২ লাখ ৬০ হাজার টাকায়। দৈনিক ৫ জন শ্রমিক বরই নামিয়ে থাকেন। ঢাকা, মাওনা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বরই বিক্রি করেন। আগামী ২ মাস পর্যন্ত মৌসুমের পুরো সময় তারা বরই বিক্রি করবেন। পাঁচজন শ্রমিক দুই মাসে বাগানে শ্রম দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।

একই গ্রামের জামাল উদ্দিন পাঠান বলেন, ৭০ শতক জমিতে ১১৬টি বরই গাছে দেড় মণ বরই পেয়ে থাকেন। এবার ২ লাখ ৭০ হাজার টাকায় বাগানটি পাইকারি বিক্রি করেছেন। বরইয়ের জমিতে রাসায়নিক সারের সঙ্গে ৪-৫ বার পনি সেচ দিতে হয়। পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচাতে বরইয়ের ফুল আসার আগেই কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। ২০ হাজার টাকা খরচ করে দুই বছর আগে বরইয়ের বাগান করেন। এখন প্রতি বছর সার, পানি, গোবরসহ ১০ হাজার টাকা সর্বসাকুল্যে খরচ হয়। দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা বিক্রি করে তিনি লাভ পেয়েছেন ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এএসএম মুয়ীদুল হাসান বলেন, গত বছর ৪০৫ হেক্টর জমিতে কুলের চাষ হয়েছে। বাজার এবং চাষিদের চাহিদা ও কৃষি সম্প্রসারণ ভিত্তিতে এবার ৪৫০ হেক্টর জমিতে কুলের আবাদ হয়েছে।

তিনি বলেন, শ্রীপুরে আপেল কুল, বাউকুল, বল সুন্দরী কুলের চাষের প্রচলন ছিল। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে টক কুলের চাহিদাও বেড়েছে। চাষে আগ্রহী নতুন কেউ এগিয়ে এলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সহযোগিতা করবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০