Print Date & Time : 25 June 2025 Wednesday 12:08 pm

গাজীপুরে ১৫ মে ভোট করা সম্ভব নয়: সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিত করার আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের রায় যদি নির্বাচন কমিশনের পক্ষেও যায়, তারপরও তফসিল অনুযায়ী ১৫ মে ওই ভোটের আয়োজন করা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা।
গাজীপুরে জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভার পর গতকাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্থগিত হওয়া ভোট নিয়ে এ কথা বলেন সিইসি নুরুল হুদা। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যদি ভোটের জন্য কোনো সময় বেঁধে না দিয়ে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেন, তাহলে তারা ভোটের তারিখ পিছিয়ে দেবেন।
সিইসি আরও বলেন, সর্বোচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ তুলে দিয়ে তফসিলে নির্ধারিত ১৫ তারিখেই ভোট করতে বললে ইসি তা অনুসরণ করবে। এর জন্য পুনঃতফসিল ঘোষণার প্রয়োজন হবে না, শুধু নির্বাচনের নতুন তারিখ নির্ধারণ করলেই হবে।
এর আগে ১৫ মে ভোটের দিন রেখে গত ৩১ মার্চ গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল ইসি। তারপর ভোটের সব প্রস্তুতিও সারা হয়েছিল; প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের সঙ্গে প্রচারও জমে উঠেছিল।
এর মধ্যেই গত রোববার হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন নিয়ে যান ঢাকার সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবিএম আজহারুল ইসলাম সুরুজ। শিমুলিয়ার ছয়টি মৌজা গাজীপুর সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজের ওই আবেদনে হাইকোর্ট গত ৬ মে ঢাকার লাগোয়া এই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করে দেন। আদেশের খবর পেয়ে ইসিও গাজীপুরে ভোটের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।
ওই নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চে আজ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
ওই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সিইসি নুরুল হুদা গাজীপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ১৫ মে গাজীপুর সিটির ভোট নেওয়া সম্ভব নয়। নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে আজকেও যদি আদালতের সিদ্ধান্ত হতো, তাহলেও নির্ধারিত সময়ে (১৫ মে) নির্বাচন করা সম্ভব হতো। আর আদালতের আদেশ যদি আগামীকালও হয়, তাহলেও ভোটের তারিখ পরিবর্তন করতে হবে।
আদালতের সিদ্ধান্তের ওপরই পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে বলে জানিয়ে সিইসি বলেন, দেখি কোর্ট কী রকম নির্দেশ দেন। কোর্ট যদি বলেন ১৫ মে ভোট নিতে হবে, তখন আমাদের যেভাবেই হোক কোর্টের আদেশ পালন করতে হবে। এখন ক্রিটিক্যাল সময় হয়ে গেছে। আদালত সময় বেঁধে না দিয়ে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করলে নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হবে।
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও এরকম কোনো আইনি জটিলতায় পড়তে পারে কি নাÑএমন প্রশ্নে নূরুল হুদা বলেন, জাতীয় নির্বাচন মেয়াদের আগের নির্ধারিত ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হয়। তাই সে নির্বাচন নিয়ে কোনো জটিলতা হবে না।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে ওই মতবিনিময় সভায় গাজীপুর নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক কর্মকর্তা রকিব উদ্দন মণ্ডল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাহমুদ হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) খন্দকার ইয়াসির আরেফিন, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তারিফুজ্জামান, এনডিসি কুদরত-এ খুদা জুয়েলসহ জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।