বাংলাদেশের কৃষকের পরিধানের প্রধান পোশাক এখনও গামছা-লুঙ্গি। তারা সাধারণত মাঠে এমন পোশাক পরেই কাজ করেন। এ অবস্থায় গতকাল শেয়ার বিজে ‘রফতানি হচ্ছে সিরাজগঞ্জের গামছা-লুঙ্গি’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরটি পাঠককে আকৃষ্ট করে থাকবে। এতে বলা হয় ভারত, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কাতারসহ বিভিন্ন দেশে গামছা-লুঙ্গি রফতানি হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জে গামছা-লুঙ্গি তৈরির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। গ্রামে সাধারণত ছোট ছোট কারখানায় তৈরি হচ্ছে এসব বস্ত্র। অনেক বাড়িতে পরিবারের সদস্যরাই তৈরি করছেন এগুলো। পাশের হাটেই এসব বিক্রি করা হয়। এখান থেকে পাইকাররা কিনে নিচ্ছেন বস্ত্রগুলো। গ্রামে সাধারণত গামছা-লুঙ্গি পরেন প্রায় সব বয়সী মানুষ। গামছা-লুঙ্গি দেশের চাহিদা মিটিয়ে এখন বিদেশেও যাচ্ছে। অনেক দেশে বাঙালিরা থাকেন। তারা ঐতিহ্যবাহী এ পোশাকে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন হয়তো। বিশেষ করে যেসব দেশে বাঙালি বেশি, সেসব দেশে এর চাহিদা বাড়ার কথা। এমন পোশাক তৈরিতে নারী সদস্যরাও কাজ করে পরিবারের অর্থনৈতিক ভূমিকা রাখছেন। এতে নারীর ক্ষমতায়নেও উন্নয়ন হচ্ছে বলা যায়।
গামছা-লুঙ্গি তৈরি করে স্থানীয় বাজারেও বিক্রি করা হয়। সংশ্লিষ্ট এলাকায় কোনো ব্যাংকের শাখা না থাকায় লেনদেনে সমস্যা হয় বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। ব্যাংকে টাকা জমা বা উত্তোলনের জন্য ১৫ কিলোমিটার দূরে সিরাজগঞ্জ শহরে যেতে হয়। এটা ঝুঁকিপূর্ণ বলে ব্যবসায়ীরা মনে করেন। ওই এলাকায় ব্যাংকের শাখা খুলে তাদের সমস্যার সমাধান করা যায় কি-না, ভেবে দেখতে পারেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, এ ধরনের পোশাক তৈরিতে খরচ আগের চেয়ে বেড়েছে। এতে মুনাফাও কমে গেছে। নতুন কারখানা তৈরিতে এগিয়ে আসতে চাচ্ছেন না অনেকে গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে। নতুন কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করে কর্মসংস্থান বাড়ানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা ভূমিকা রাখবেন আশা রাখি।
বিদেশে যেসব পণ্য রফতানি করা হয়, তার মধ্যে অন্যতম তৈরি পোশাক। এর সিংহভাগ রফতানি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ ও শিল্পোন্নত দেশে। রফতানি খাতে তৈরি পোশাক অবদান রাখছে ব্যাপক। এর পাশাপাশি গামছা-লুঙ্গি রফতানি বাড়লে ভালোই হয়। এ খাতের বিকাশে সংশ্লিষ্টরা এগিয়ে আসতে পারেন। যেসব দেশে বাঙালি বেশি, সেসব দেশকে এক্ষেত্রে আরও বেশি করে টার্গেট করতে হবে। তাঁতশিল্পের বিকাশে সংশ্লিষ্টরা সুনজর দেবেন এমনটাই প্রত্যাশা।