Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 5:59 pm

গার্মেন্টে ছুটি ঘোষণার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক : নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটায় তৈরি পোশাক শ্রমিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে গার্মেন্টগুলো বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে ১০টি শ্রমিক সংগঠন। গার্মেন্ট শ্রমিক অধিকার আন্দোলন নামের একটি জোটের ব্যানারে গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানায় তারা।

বৈশ্বিক মহামারিতে রূপ নেওয়া কভিড-১৯ রোগী বাংলাদেশেও শনাক্ত হওয়ার পর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করেছে সরকার, বিভিন্ন অফিস-আদালতেও কাজ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, গার্মেন্ট শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি ঘনবসতির পরিবেশে কাজ করে বলে তারা সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

‘একই দালানে পাঁচ থেকে ১০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তাদের থাকার জায়গা ম্যাচ বা বাসার অবস্থাও ঘনবসতিপূর্ণ। এ অবস্থায় সাড়ে চার হাজার কারখানার ৪০ লাখ শ্রমিকের মাঝে যদি করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়, তাহলে পরিস্থিতি ভয়াবহতায় রূপ নেবে।’

সে রকম পরিস্থিতি হলে বিদেশিরা বাংলাদেশে তাদের সব ক্রয় আদেশ বাতিল করে দেবে আশঙ্কা করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় গার্মেন্ট শ্রমিকদের চলতি মার্চ মাসের পূর্ণ বেতন ও যাতায়াত ভাতা দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে কারখানা বন্ধ বা ছুটি ঘোষণা করতে হবে।’

বিবৃতিদাতারা হলেন গার্মেন্ট শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফোরামের মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির তাসলিমা আক্তার লিমা, ওএসকে গার্মেন্ট টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের ইয়াসিন মিয়া, গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের রাজু আহমেদ, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির শবনম হাফিজ, গার্মেন্ট শ্রমিক সভার সভাপতি শামসুজ্জোহা, গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলনের বিপ্লব ভট্টাচার্য, বিপ্লবী গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির মীর মোজাফফর হোসেন মোস্তাক, জাতীয় সোয়েটার গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশন এএএম ফয়েজ হোসেন।

এ দাবিতে রোববার শ্রমমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেবে গার্মেন্ট শ্রমিক অধিকার আন্দোলন। এদিকে পরিস্থিতি উদ্বেগের হলেও এখনই কারখানায় ছুটি ঘোষণার সময় আসেনি বলে শনিবার শ্রমভবনে এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।

তবে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলছেন, শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে তারাও চিন্তিত। কিন্তু কোনো সময়ে ছুটি ঘোষণা করা যায়, সেটা নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে তারা আলোচনা করছেন। রোগের বিস্তার বিবেচনায় নিয়ে তারা ছুটির বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

যদিও শিল্প-কলকারখানা আপাতত চালু রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। তবে পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকার কথা বলা হয়। গতকাল বিকালে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় শ্রম ভবনের সম্মেলন কক্ষে ‘শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক’ শেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, শিল্প-কলকারখানা বন্ধ করা বড় কোনো ঘটনা না। আমরা আপাতত বন্ধ করব না। তবে সার্বিক বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে করোনা ভাইরাসকে মোকাবিলা করব।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শ্রমসচিব কেএম আলী আজম, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক একেএম মিজানুর রহমান, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, লেবার ফেডারেশনের সভাপতি শাহ মো. আবু জাফর, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শামীম আরা প্রমুখ।