বছর দুয়েক আগের কথা। পরিচিত এক ছোট ভাই ফোন দিয়ে দেখা করতে চাইল। তখন আমি বাসা থেকে বেশ দূরে ছিলাম। ফিরতেও সময় লাগবে। সন্ধ্যায় বাসায় আসতে বললাম। কিন্তু সেই ছোট ভাই তখনই দেখা করবে। তার জরুরী প্রয়োজন। কি আর করা? আমি আমার অবস্থান জানালাম। আমি নিশ্চিত ছিলাম, আমার পর্যন্ত আসতে সে কয়েকবার আমাকে ফোন দিবে।
কারণ আগেই বলেছি, আমি বেশ দূরে ছিলাম। কিন্তু অবাক লাগল, সে আমাকে কোনো ফোন করল না। সরাসরি আমার সামনে হাজির। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি আমাকে ফোন না দিয়ে কিভাবে চলে আসলে? সে তখন বলল, আপনি তো আপনার অবস্থান আমাকে বলে দিয়েছেন। এরপর গুগল ম্যাপের মাধ্যমে আপনার অবস্থান গন্তব্য হিসেবে ঠিক করে, আপনার এখানে চলে এসেছি।
কোন মানুষকে কিছু জিজ্ঞেস করতেও হয়নি। তখন পর্যন্ত, আমি গুগল ম্যাপের ব্যবহার সেইভাবে জানতাম না। কিন্তু ঐ ঘটনার পর থেকে গুগল ম্যাপ ব্যবহার করছি। এখন যে কোনো অপরিচিত জায়গায় যেতে হলে, আমি আগে থেকেই কোন রাস্তা দিয়ে যেতে হবে, সেটা গুগল ম্যাপের মাধ্যমে দেখে নেই।বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন প্রতিটা মানুষের হাতে হাতে। কিন্তু অনেকেই গুগল ম্যাপ ব্যবহার করেনা।
অথচ এটা এন্ড্রয়েড ফোনের বিল্ট-ইন অ্যাপ অর্থাৎ মোবাইল ফোনে দেয়াই থাকে। আপনাকে কষ্ট করে প্লে-স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে হয় না।।আমি মনে করি, আমাদের প্রত্যেকেরই গুগল ম্যাপ ব্যবহার করা উচিত। বিশেষ করে যদি কেউ অপরিচিত রাস্তায় কিংবা দূরের পথে যাওয়ার জন্য বের হন।আপনি কোনো অপরিচিত রাস্তায় নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বের হয়েছেন (সেটা হেঁটে/রিক্সা/গাড়ি ভাড়া করে হতে পারে)।
আপনি ঠিক পথে আছেন কিনা, সেটা গুগল ম্যাপের মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারবেন। কেউ আপনাকে ভুল পথে নিতে পারবে না। কারো কাছে কিছু শুনতে হবে না। কেউ বুঝতেও পারবে না, আপনি সেই রাস্তায় নতুন কিনা?আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, আপনি যখন গুগল ম্যাপ ব্যবহার করবেন, সেটা সোশ্যাল মিডিয়া, হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে শেয়ার করে রাখতে পারেন। এতে করে আপনার পরিচিত মানুষ আপনার অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারবে।
এছাড়া গুগল ম্যাপের মাধ্যমে যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হোটেল, রেস্তোরা, অফিস-আদালত, শোরুমসহ যে কোন কিছুর ঠিকানা জানতে পারি। আশেপাশের মুদি দোকান, ফার্মেসির অবস্থানও জানতে পারি।অনেক অনাকাঙ্খিত ঘটনা গুগল ম্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে এড়ানো সম্ভব। যেহেতু হাতের মুঠোয় রয়েছে এন্ড্রয়েড ফোন, তাহলে রেডিমেট সুযোগ-সুবিধা সমূহ না গ্রহণ করাও বোকামি।
লেখক-রিয়াজুল হক, যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক