গুচ্ছ নয়, নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা চান জবির জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা

আশিকুল ইসলাম, জবি: চলতি বছরে গুচ্ছভুক্ত ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় না যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকরা। বিভিন্ন সময়ে এই অধ্যাপকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আয়োজনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। গুচ্ছ পরীক্ষার নানা অব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষার্থীর সংকটের বিষয়গুলো আমলে নিয়ে নিজেদের ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির এই শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব মান বজায় রাখার জন্য গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি থেকে বের হওয়ার বিকল্প নেই বলেও মনে করেন তারা।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়া বলেন, রাষ্ট্রপতির নির্দেশ থাকলেও সব বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছে আসেনি। আবার যারা এসেছে তারাও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। তারা রাষ্ট্রপতির আদেশ পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। ঢাবি, জাবিসহ কয়েক বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছে আসেনি। এছাড়া ভর্তি প্রক্রিয়ায় প্রতি ধাপেই অব্যবস্থাপনা ছিল। তাই গুচ্ছের বাইরে এসে নিজস্ব নিয়মে ভর্তি পরীক্ষায় যাওয়া উচিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের।

জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান বলেন, আমাদের শিক্ষক সমিতিতে এখনও এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বা কোনো সাধারণ সভায় বিষয়টি উঠে আসেনি। তবে আমরা সবাই ব্যক্তিগতভাবে প্রথম থেকেই গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বিরুদ্ধে ছিলাম। তবে প্রথমবারে গুচ্ছ থেকে বের হওয়ার সুযোগ ছিল। এখন বের হওয়া মানে সরকারের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়া। এখন ছাত্রছাত্রীদের কথা চিন্তা করে তাদের গুচ্ছের ফলে যে অসুবিধা হচ্ছে, সেগুলোর কথা চিন্তা করে আমাদের সবার সম্মিলিত চেষ্টার মাধ্যমে এটা তুলে ধরতে হবে যে, এটা সুবিধার চেয়ে অসুবিধা তৈরি করছে বেশি। এ নিয়ে শিক্ষক সমিতি গুচ্ছের ভেতর থাকা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কথা বলছে।

জবি ছাত্রকল্যাণের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, আমরা অনানুষ্ঠানিকভাবে উপাচার্য বরাবর বলে আসছি যে, আমরা গুচ্ছের বিপক্ষে। আজ গুচ্ছে থাকা ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে বৈঠক হবে। সেখানে গুচ্ছের সব সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলোচনা হবে। তারপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছের ভেতর থাকবে কি না, এ বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত আসবে। এরপর আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আলোচনায় বসবো।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন বলেন, প্রথমবারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষায় ছিল নানা রকমের ত্রুটি। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে, ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা এ ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করে তা কীভাবে সমাধান করতে পারেন। আর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছে থাকা না থাকার বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে কী সিদ্ধান্ত হয়, তার ওপর নির্ভর করবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি আমাদের সঙ্গে প্রশাসনিক দূরত্ব থাকার কারণে। তবে যে উদ্দেশ্য নিয়ে গুচ্ছে যাওয়া হয়েছিল, তা হাসিল করতে আয়োজক কমিটি চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

এদিকে গুচ্ছে থাকা বা না থাকার বিষয়ে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, আমরা গুচ্ছে থাকা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দিইনি। আমরা বলেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও শিক্ষক সমিতি সবার সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাব।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০