গৃহস্থালি কাজের আর্থিক মূল্য বের করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক: নারীরা গৃহস্থালি ক্ষেত্রে যে কাজ করেন, তার আর্থিক মূল্য বের করার বিষয়ে উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের নারীদের এই বিশাল কর্মযজ্ঞের জিডিপিতে বড় অবদান থাকা সত্ত্বেও তা হিসাবে আসে না। তাই এই কর্মকাণ্ডের আর্থিক মূল্য কীভাবে নির্ধারণ করা যায়, তার উপায় অনুসন্ধানের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন বলে সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। তবে জিডিপি হিসাব করার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যে পদ্ধতি রয়েছে, তা অনুসরণ করতে হলে নারীদের এই কার্যক্রম হিসাবের আওতায় আনা কতটা সম্ভব হবে, সে বিষয়ে এখনও কিছু নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না বলে অভিমত দেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৬ সালের তুলনায় বর্তমানে দেশে দারিদ্র্যহার হ্রাস পেয়েছে। তবে দারিদ্র্য হ্রাস পেয়ে কত শতাংশ হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি পরিকল্পনামন্ত্রী। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এই হিসাব প্রকাশ করবে। তবে দারিদ্র্য হ্রাস পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বলে মন্ত্রী জানান। দেশে দারিদ্র্যের হার হিসাব করা হয় মূলত খানা আয়-ব্যয় জরিপের মাধ্যমে। এর আগে সর্বশেষ জরিপটি পরিচালিত হয়েছিল ২০১৬ সালে। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর এই জরিপ হওয়ার কথা থাকলেও এবার তা সম্পন্ন হয়েছে ছয় বছরেরও বেশি সময় পর।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অর্থনীতিতে গৃহস্থালি কাজের অবদান স্বীকার করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে আমাদের অনুশাসন দিয়েছেন। এ বছর তো বাজেটের কার্যক্রম শেষ। আমরা বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (বিআইডিএস) দায়িত্ব দিয়েছি। তারা শিগগিরই এ বিষয়ে উদ্যোগ নেবে। আশা করি আগামী বছরের বাজেটে জিডিপিতে গৃহস্থালি কাজের হিসাব করতে পারব।

একনেক সভায় প্রবাসী আয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন রেমিট্যান্স বেড়েছে রোজা ও ঈদের কারণে। এ নিয়ে উচ্ছ্বাসের কিছু নেই। আগামীতে এই ধারা অব্যাহত নাও থাকতে পারে। পরে কোরবানির ঈদের আগে হয়তো আবারও বাড়তে পারে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘একটি প্রকল্প পাস করতে গিয়ে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সøুইস গেট নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, হাওরে আর সড়ক হবে না, উড়াল সড়ক হবে। পাশাপাশি কিছুদিন আগে বন্যার পানির চাপে সড়কের যেখানে পানির চাপ বেশি, সড়ক যেখানে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে মেরামত না করে কালভার্ট নির্মাণ করতে হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রকল্পে বেশি পরামর্শক না নেয়ার অনুশাসন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অনুমোদন দেয়া একটি প্রকল্পে একজনের বেশি পরামর্শক না

নেয়ার নির্দেশনা দেন তিনি। পাশাপাশি সমুদ্রকেন্দ্রিক সুনীল অর্থনীতি (ব্লু ইকোনমি) কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শিশুপল্লির ছেলে-মেয়েদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কারিগরি শিক্ষার আওতায় আনার নির্দেশনাও দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেনÑপরিকল্পনা সচিব সত্যজিৎ কর্মকার, আইএমইডির সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য অধ্যাপক ড. কাউসার আহম্মদ, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য এমদাদউল্লাহ মিয়ান এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন প্রমুখ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০