ক্রীড়া প্রতিবেদক: দর্শকরা সাধারণত মাঠে আসেন ক্রিস গেইলের ঝড় দেখতে। কিন্তু চলতি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ফের ব্যর্থ হয়েছেন এ তারকা। তবে ঠিকই ব্যাটিং দ্যুতিতে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম আলোকিত করে তোলেন লিটন কুমার দাস। মূলত তার সাধারণ নৈপুণ্যে গতকাল দিনের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে রাজশাহী রয়্যালস।
গতকাল মিরপুরের আকাশে ছিল মেঘ। শুধু তা-ই নয়, শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে চারপাশ ছিল ধোঁয়াটে। উইকেটে ঘাসের ছোঁয়া। এমন বিরূপ পরিবেশে অবশ্য গেইল পারেননি ঝড় তুলতে। তবে পরে ব্যাট করতে নেমে
লিটন খেলেন দুর্দান্ত। ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসে তিনি করেন ৪৮ বলে ৭৫ রান। এবারের বিপিএলে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে পার করেন ৪০০ রান।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে গতকাল চট্টগ্রামকে ১৫৫ রানে আটকে রেখে রাজশাহী জিতে ১৪ বল বাকি রেখে। এর ফলে এ টুর্নামেন্টে দলটি শীর্ষ দুই নিশ্চিত করায় ফাইনালে ওঠার জন্য অন্তত দুটি সুযোগ পাবে।
রাজশাহীর লক্ষ্যমাত্রাটা ১৫৬ রান হওয়ায় কখনই ২২ গজে ব্যাট চালাতে বেগ পেতে হয়নি রাজশাহীর। যার শুরুটা করেন লিটন ও আফিফ হোসেনের জুটি। দুজন ১০ ওভারে তুলে ফেলেন ৮৮ রান। এরপর আফিফ আউট হয়ে যান ৩১ বলে ৩২ করে। তবে দল ততক্ষণে পেয়ে যায় শক্ত ভিত। লিটন ও শোয়েব মালিক দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৫০ রানের জুটি। শেষ পর্যন্ত লিটন থামেন ১১ চার ও ১ ছয়ে ৭৫ রানে। তাকে ফেরান জিয়াউর রহমান। উইকেট সোজা বলে ব্যাট চালালেও লাইন মিস করেন লিটন। বল লাগে প্যাডে। বোলার-কিপারের আবেদনে আম্পায়ার আউট দেন। লিটন অবশ্য রিভিউ নিয়েছিলেন। কিন্তু বাঁচতে পারেননি।
লিটন ফিরলেও রাজশাহীর জিততে কোনো সমস্যায় পড়তে দেননি শোয়েব মালিক। পাকিস্তানের সাবেক এ ক্রিকেটার শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ২৫ বলে ৪৩ রান করে।
এর আগে টস জিতে বল হাতে রাজশাহীর শুরুটা হয়েছিল মোটামুটি। সে সুযোগে চট্টগ্রামের দুই ওপেনার জুনায়েদ সিদ্দিকী ও ক্রিস গেইল ৬ ওভারে করেন ৩৮ রান। পরে অবশ্য তারা কেউ খেলতে পারেননি বড় ইনিংস। ২৩ বলে ২৩ করে জুনায়েদ সীমানায় ধরা পড়েন শোয়েব মালিকের ওভারে। গেইল ফেরেন আফিফের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়ে। তার আগে তিনি করেন ২১ বলে ২৩ রান।
চট্টগ্রামের বিপদে গতকাল ইমরুল কায়েসও পারেননি তেমন কিছু করতে। ফর্মের তুঙ্গে থাকা এ বাঁহাতি সর্বসাকুল্যে করেন ১৮ বলে ১৯ রান। এদিকে ব্যর্থ হন চাডউইক ওয়ালটনও। তবে বন্দরনগরীর দলটির শেষ তিন ওভারে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে আশা জোগান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৩৩ বলে ৪৮*) ও নুরুল হাসান সোহান (১৭ বলে ৩০)। ওই তিন ওভারে তারা তুলেন ৪৫ রান। যে কারণে দলটি পেরিয়ে দেড়শ’। কিন্তু লিটন ঝড়ের কাছে শেষ পর্যন্ত বড় হার মানতে হয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১৫৫/৫ (গেইল ২৩, জুনায়েদ ২৩, ইমরুল ১৯, মাহমুদউল্লাহ ৪৮*, ওয়ালটন ৪, সোহান ৩০, জিয়া ৭*; ইরফান ৪-০-২৪-১, আবু জায়েদ ২-০-১২-১, কামরুল রাব্বি ৩-০-৩৭-০, মালিক ৩-০-১১-১, আফিফ ২-০-১৮-১, তাইজুল ২-০-২০-১, অলক ৩-০-১৬-০, ফরহাদ ১-০-১৭-০)।
রাজশাহী রয়্যালস: ১৭.৪ ওভারে ১৫৬/২ (লিটন ৭৫, আফিফ ৩২, মালিক ৪৩*, রাসেল ২*; রুবেল ৩-০-২৭-০, প্লাঙ্কেট ৩-০-৩১-০, নাসুম ৪-০-৩৩-১, মাহমুদউল্লাহ ৩-০-২৮-০, এমরিত ৩-০-২০-০, জিয়া ১.৪-০-১৭-১)।
ফল: রাজশাহী রয়্যালস ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: লিটন দাস