গেল সপ্তাহে ডিএসইতে বাজার মূলধন বেড়েছে দুই দশমিক ৪৪ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে বাজার মূলধন বেড়েছে দুই দশমিক ৪৪ শতাংশ। ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ২৫ হাজার ৭৩২ কোটি ৭৬ লাখ এক হাজার ৪৩৭ টাকা। শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল তিন লাখ ৩৩ হাজার ৬৮৫ কোটি ৯৩ লাখ ৮২ হাজার ৫৭৭ টাকা।

অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে সাত হাজার ৯৫৩ কোটি ১৭ লাখ ৮১ হাজার টাকা বা দুই দশমিক ৪৪ শতাংশ।

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫০ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়ে চার হাজার ৩৬৪ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ৩৪ দশমিক ৬১ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ১১ দশমিক ১১ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএস৩০ সূচক ৫৫ দশমিক ২৪ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৪৭৫ দশমিক ৮৮ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৬১টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২৬০টির, কমেছে ৪২টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৫৭ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি ২টির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৭২৫ কোটি ৯৭ লাখ ৫৮ হাজার ৫৬৩ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৪৪৬ কোটি ৭৫ লাখ ৩৮ হাজার ৭১৫ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ২৭৯ কোটি ২২ লাখ ১৯ হাজার ৮৪৮ টাকা বা ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ।

গেল সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ হাজার ৯০৩ কোটি ৯০ লাখ ৩৪ হাজার ২৫১ টাকা; আগের সপ্তাহে যা ছিল ২ হাজার ২৩৩ কোটি ৭৬ লাখ ৯৩ হাজার ৫৭৬ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার বেড়েছে ৬৭০ কোটি ১৩ লাখ ৪০ হাজার ৬৭৫ টাকা বা ৩০ শতাংশ।

গত সপ্তাহে ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে বিমা খাতের কোম্পানি বিমা খাতের কোম্পানি পিপলস ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৩৯ দশমিক ৭১ শতাংশ। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড় লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৫ লাখ ২১ হাজার ৫০০ টাকার শেয়ার। সপ্তাহ শেষে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৪ কোটি ২০ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।

তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে নিটল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৩০ দশমিক ৯১ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ৫ কোটি ৮৫ লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ৪৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকার শেয়ার।

তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালস লিমিটেড। ‘বি’ ক্যাটেগরির এই কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২৯ দশমিক ২৯ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ৭ কোটি ৬৯ লাখ ৯৮ হাজার ৫০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ৭৯ লাখ ৯৪ হাজার টাকার শেয়ার।

এরপরের অবস্থানে ছিল যথাক্রমে সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ও  ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। ওষুধ ও রসায়ন খাতের ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানি সিলকো ফার্মার শেয়ারদর বেড়েছে ২৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ১০ কোটি ২৭ লাখ ৭৮ হাজার ২৫০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৪১ কোটি ১১ লাখ ১৩ হাজার টাকার শেয়ার।

আর ফাস ফাইন্যান্সের শেয়ারদর বেড়েছে ২৫ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন এক কোটি ৭৭ লাখ ১৬ হাজার ২৫০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকার শেয়ার।

ডিএসইতে টার্নওভারের দিক থেকে শীর্ষে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির এক কোটি ৩৫ লাখ ৭৭ হাজার ৩২৫টি শেয়ার ১১৬ কোটি ৯৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ০৩ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেড়েছে।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটির এক কোটি ৬০ লাখ ৪৯ হাজার ৮৮৫টি শেয়ার ১০৩ কোটি ২৪ লাখ ২২ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের তিন দশমিক ৫৬ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর ১৭ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়েছে।

কোম্পানিটি ২০০১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে লেনদেন হচ্ছে। ১০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৬৯ কোটি ৯৮ লাখ ১০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৬৯ কোটি ৯৮ লাখ ১০ হাজার টাকা।

কোম্পানিটির মোট ৬ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার ৬২৫টি শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্য মতে, মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের কাছে ৪৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ২৩ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩১ দশমিক ৩৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটি ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে চার টাকা ৮৯ পয়সা এবং ৩১ ডিসেম্বর তারিখে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৪৪ টাকা ৯ পয়সা। আগের বছর একই সময় ছিল যথাক্রমে তিন টাকা ৮২ পয়সা ও ৪৫ টাকা ৮ পয়সা। আর এই হিসাববছরে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ৫ টাকা ৪৮ পয়সা, আগের বছর যা ছিল চার টাকা ৭৮ পয়সা। ঘোষিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য আগামী ৩ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় অনলাইনে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ আগস্ট।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০