গোপালগঞ্জে ক্রেতাশূন্য নৌকার হাট

প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: নৌকা বিক্রির জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন হাট। অথচ হাটে নেই কোনো ক্রেতা। ক্রেতার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন নৌকা বিক্রেতারা।

জানা গেছে, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী, সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার, পানাইল হাট, মুকসুদপুর উপজেলার জলিড়পাড়, কাশিয়ানি উপজেলার রামদিয়া বাজার, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্নি ও পাথরঘাটা হাটে নিয়মিত বসে এই নৌকার হাট। বর্ষার শুরুতে প্রচুর নৌকা বিক্রি হলেও এবার নৌকা বিক্রি হচ্ছে না বললেই চলে। সারাদিন বসে দু-একটি নৌকা বিক্রি করতে পারছেন কোনো বিক্রেতা। মাস খানেক আগেও প্রতি হাটে একজন বিক্রেতা কম হলেও ২৫টি নৌকা বিক্রি করতে পেরেছেন। প্রতি শুক্রবার ও সোমবার বসে নৌকার হাট। তবে প্রায় দিনই নৌকা বেচাকেনা হয়।

বৃহস্পতিবার বিকালে ভোড়ার হাটে বসে কথা হয় নৌকা বিক্রেতা বিকাশ দাসের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাড়ি বসে নৌকা তৈরি করে হাটে বিক্রি করতে এসেছি সকালে। বিকাল গড়িয়ে গেলেও একটি নৌকাও বিক্রি করতে পারেননি তিনি। কোটালীপাড়া উপজেলার ধারাবাশাইল হাটের নৌকা বিক্রেতা অশোক মণ্ডল বলেন, ক্রেতার অভাবে সকাল থেকে সারাদিন একটি নৌকাও বিক্রি করতে পারিনি। তাই পড়ন্ত বিকালে অলসতা নিয়ে নৌকার ওপরই ঘুমিয়ে পড়েছি। একই অবস্থা চলছে জেলার অন্য হাটগুলোয়ও।
বর্ষার শুরুতে নৌকার হাটগুলো বেশ জমে ওঠে। প্রতি হাটে ২৫-৩০টি নৌকা বিক্রি করেন একজন ব্যবসায়ী। তাছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিনও তিনি প্রায় ১০টি নৌকা বিক্রি করতে পারেন। অন্যরাও এই সংখ্যক নৌকা বিক্রি করেছেন এ সময়। এখন বেচাকেনা কমে গেছে। আরও মাসখানেক চলবে নৌকা বেচা-কেনার হাট।

আরেক নৌকা বিক্রেতা সলেমান শেখ জানান, সারাদিনে তিনি দুটি নৌকা বিক্রি করেছেন। অপেক্ষায় আছেন ক্রেতার। উপজেলার টুপরিয়া গ্রাম থেকে সুমন মল্লিক নামে এক ব্যক্তি এখানে নৌকা কিনতে এসেছেন। তার বাড়ি বিলের ভেতরে। শুকনো মৌসুমে পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে পারলেও বর্ষার সময় নৌকা ছাড়া বাড়ির কেউ বের হতে পারেন না। তাছাড়া এ সময় নৌকা দিয়ে তিনি মাছ ধরে ও শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার পুরোনো নৌকা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিনি গত সোমবার গিয়ে ছিলেন তারাশী গ্রামে নৌকার হাটে।

নৌকা ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে মূলত ১২ থেকে ১৬ ফুটের ছোট ও মাঝারি আকারের নৌকা বেশি বিক্রি হয়। অনেকে শুধু বর্ষাকালে চার পাঁচ মাসের জন্য মৌসুমি এই ব্যবসা করে মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করেন। এ বছর সেই লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না তারা। তবে বন্যার পানি এখন যেভাবে বাড়ছে, তাতে নৌকার চাহিদা বাড়বে বলে আশা করছেন নৌকা বিক্রেতারা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০