গোমতীর পানি এখনও বিপৎসীমার ওপরে

প্রতিনিধি, কুমিল্লা: বাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার তিন দিন পরও বিপৎসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে কুমিল্লার গোমতী নদী। নদীর পানি কমছে প্রতি ঘণ্টায় ১ সেন্টিমিটার করে। গত রোববার রাত সাড়ে ৮টায় এ তথ্য জানিয়েছেন কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী খান মো. ওয়ালিউজ্জামান।

তিনি বলেন, গোমতীর বাঁধ ভাঙার পর থেকে এখন পর্যন্ত বাঁধ ভেজা। পানি কমছে। তবে নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হচ্ছে। উজানের পানি বন্ধ হলে এবং আর বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
প্রকৌশলী ওয়ালিউজ্জামান বলেন, বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া এলাকার নদী ভাঙনের অংশটি বিস্তৃত হচ্ছে। পানির স্রোত অবিরত প্রবাহের ফলে ভাঙন প্রসারিত হচ্ছে। বর্তমানে ২০০ ফুটের মতো প্রসারিত হয়েছে ওই অংশ; যা গত বৃহস্পতিবার রাতে ৩০ ফুটের মতো ছিল।
অপরদিকে প্রতি ক্ষণে ক্ষণে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা। ডুবছে মানুষের ঘরবাড়ি, শত শত হেক্টর ফসলি জমি, মাছের ঘের, গরুর খামার এবং পোলট্রি খামার। ঘরবাড়ি হারিয়ে দিশাহারা মানুষ ছুটে যাচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে।

গোমতী নদীর উত্তর পাশের বাঁধ ভাঙার ফলে বুড়বুড়িয়া, গাজীপুর হয়ে গোমতীর পানি বাকশীমুল, পিতাম্বর হয়ে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নিম্নাঞ্চলে প্লাবন সৃষ্টি করছে। গত দু’দিনে ব্রাহ্মণপাড়ায় ৪০টির মতো গ্রামে বন্যার ছোঁয়া লেগেছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার পর্যন্ত জেলার ১২৫টি ইউনিয়ন, পৌরসভার ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে বানের পানিতে। জেলাজুড়ে ১ লাখ ৯২ হাজার ৩৪৬টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; যা গতকাল শনিবার ছিল ১ লাখ ৬৩ হাজার ৪২৮টি। জেলাজুড়ে পানিবন্দি ৯ লাখ ৫১ হাজার ১০৯ জন; যা গতকাল ছিল ৭ লাখ ৯৩ হাজার ১৪২ জন। বন্যায় কুমিল্লায় এখন পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

তাছাড়া নতুন করে রোববার তিতাস উপজেলায় দুই শিশুর মৃত্যু হয় বানের জলে ডুবে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবেদ আলী বলেন, ‘জেলাজুড়ে মোট ৭২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জেলায় এখন পর্যন্ত ৬০০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে ৩৩ লাখ টাকা। জেলাজুড়ে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত আছে।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০