২২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ

গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আলোচিত গাড়ি ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় প্রায় ২২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া মনিরের নামে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ২৩টি প্লটের সন্ধান মিলেছে। সে বিষয়ে আরও বিস্তারিত তদন্ত প্রয়োজন বলেও মামলার এজাহারে বলা হয়েছে।

গতকাল সোমবার দুদকের উপ-পরিচালক মামুনুর রশিদ চৌধুরী বাদী হয়ে ‘সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১’-এ মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত ৯ জানুয়ারি মামলার অনুমোদন দেয়া হয়।

দুদক সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর গোল্ডেন মনিরের বরাবর সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিস জারি করা হয়েছিল। ২০২১ সালে ২ মার্চ তিনি দুদকে প্রায় ৪৮ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের বিবরণী দাখিল করেন। দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তারা তার ঘোষিত সম্পদ যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে পারিবারিক ব্যয়সহ প্রায় ৫৬ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির তথ্য পায়। ২০১০-১১ থেকে ২০২০-২১ করবর্ষে মনিরের বেতন-ভাতা, গৃহসম্পত্তি, ব্যবসাসহ অন্যান্য খাত থেকে প্রায় সাড়ে ২৬ কোটি টাকা আয়ের উৎস পাওয়া যায়।

এছাড়া মনিরের মালিকানাধীন অটোকার সিলেকশনের নামে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক প্রগতি সরণি শাখা এবং স্ত্রী রওশন আক্তারের নামে সুদবিহীন সোয়া সাত কোটি টাকার ঋণের তথ্য পাওয়া গেছে। ঋণ ও বৈধ উৎস মিলিয়ে তার মোট সম্পদ হওয়ার কথা প্রায় ৩৪ কোটি টাকার। কিন্তু আয়ের উৎসবর্হিভূত অবৈধভাবে উপার্জিত আরও প্রায় ২২ কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি পাওয়া গেছে, যা তার আয়ের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।

দুদক সূত্র জানায়, এছাড়া দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাই ও অনুসন্ধানকালে দেখা গেছে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বিভিন্ন প্রকল্পে মনির হোসেনের নামে মোট ২৩টি প্লট রয়েছে। কিন্তু তিনি একটি প্লটের বিষয়েও দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেননি। তিনি তার নামে থাকা প্লটগুলোর বিষয়ে তথ্য গোপন করেছেন। অসাধু উপায়ে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণভাবে নিজ নামে বিপুল অর্থ-সম্পদ অর্জন করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪’-এর ২৭(১) ধারায় অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার তদন্তে আরও সম্পদের তথ্য পাওয়া গেলে তা অভিযোগপত্রে সংযুক্ত করা হবে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২০ সালে গোল্ডেন মনিরের অবৈধ সম্পদের খোঁজে মাঠে নামে দুদক। তার সম্পদ অনুসন্ধান কর্মকর্তার দায়িত্ব দেয়া হয় উপপরিচালক সামছুল আলমকে। এরপর উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম ও উপপরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরীকে।

এর আগে গত ৪ জানুয়ারি বাড্ডার ডিআইটি প্রকল্পের প্লটসহ বিভিন্ন জমি আত্মসাতের চেষ্টা ও নথি গায়েবের অভিযোগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গোল্ডেন মনিরসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ওই মামলার বাকি আসামিরা হলেনÑরাজউকের উপ-পরিচালক মো. দিদারুল আলম, অবসরপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন শরীফ, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. আনোয়ার হোসেন, ঊর্ধ্বতন হিসাব সহকারী এসএম তৌহিদুল ইসলাম, কার্য তদারককারী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন সরকার ও রাজউক অফিস সহায়ক মো. পারভেজ চৌধুরী, জমির দালাল সিরাজগঞ্জের মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও নারায়ণগঞ্জের মো. নাসির উদ্দিন খান।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০