নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: দ্বিতীয় দফায় বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত গোল্ডেন সন লিমিটেডের শতাধিক শ্রমিক। কারখানার শ্রমিকরা সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্যারটেক এলাকায় কারখানার সামনে আন্দোলন শুরু করেন। চলতি মাসের শুরুর দিকেও এসব শ্রমিক একই দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন।
আন্দোলনরত কয়েকজন শ্রমিক জানান, দুই মাস ধরে বেতনভাতা দেয়নি কারখানা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ঈদের আগে এক মাসের বেতন পরিশোধ করার কথা থাকলেও পরিশোধ করেনি। ফলে দ্বিতীয় দফায় আজ আবারও বকেয়া বেতন ও বোনাস পরিশোধের দাবিতে সকাল থেকে আন্দোলনে নেমেছি। কারখানা কর্তৃপক্ষ বারবার দেবে বলে দিচ্ছে না।
কারখানার ম্যানেজার ওমর হায়দার জানান, বেতনভাতা নিয়ে শ্রমিকরা যে আন্দোলন করছিল, তা নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। গত মার্চ মাসের বেতন আগামী ১৭ মে রকেটের মাধ্যমে এবং এপ্রিল মাসের বেতন ২০ মে একইভাবে পরিশোধ করা হবে। এছাড়া বোনাসের বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা চলছে। তারা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন।
এ বিষয়ে বেলা ৩টায় মুঠোফোনে গোল্ডেন সন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেলাল আহমেদ শেয়ার বিজকে বলেন, করোনা সংক্রমণের কারণে গত ডিসেম্বরে চীন থেকে কাঁচামাল আসেনি। তিন মাস পর গত মার্চে এয়ারে করে কাঁচামাল এনেছি। এরই মধ্যে তো উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি করতে পারিনি।
চারদিকে ভয়াবহ পরিস্থিতি। এসব কারণে বেতন দিতে কষ্ট হচ্ছে। আজকের শ্রমিকদের আন্দোলনের কথা গত রাতে শুনেছি। ব্যবসাই তো হয়নি। আবার বোনাসও দাবি করে। কীভাবে সম্ভব? আগামীকাল একটা অংশকে বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করব।
কতজন শ্রমিক বেতন পায়-জানতে চাইলে তিনি সঠিক সংখ্যা বলতে পারেননি। প্রণোদনার জন্য আবেদন করেছেন কি না-জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে প্রণোদনার কাজের জন্য কেউই অভিজ্ঞ নন। ফলে একেক সময় একেকটা ডকুমেন্টস খোঁজে।
কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় গোল্ডেন সন লিমিটেড। কোম্পানিটি সর্বশেষ দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০১৯) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪৩ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ৫৪ পয়সা। এককভাবে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪১ পয়সা।
আগের বছর একই সময় ছিল ৫২ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯ শেষে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি প্রকৃত সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ২০ টাকা ৬৪ পয়সা। এছাড়া সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয় পাঁচ টাকা ৮০ পয়সায়। আর ৫০০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের এ কোম্পানির ৩৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালকের শেয়ার এবং বাকি ৬১ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার।
