প্রতিনিধি, নরসিংদী: নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় আড়িয়াল খাঁ নদে গোসলে নেমে নিখোঁজ শিশু ইয়াছিনের (৮) মরদেহ দীর্ঘ ৪১ ঘণ্টা পর ভেসে উঠল। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় মরদেহটি ভেসে উঠলে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। এর আগে শনিবার দুপুরে বেলাব বাজারের আড়িয়াল খাঁ নদে বন্ধুদের সঙ্গে গোসল করতে নেমে ডুবে যায় ইয়াছিন।
মৃত শিশু ইয়াছিন কিশোরগঞ্জ জেলার বত্রিশ গ্রামের রাসেল মিয়ার ছেলে। সে বেলাব উপজেলার মাটিয়ালপাড়া গ্রামে তার নানা রইছ উদ্দিনের বাড়িতে থাকত। সেখানে থেকেই স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা জানায়, শনিবার দুপুর একটার দিকে শিশু ইয়াছিন তার বন্ধুদের সঙ্গে আড়িয়াল খাঁ নদে গোসল করতে যায়। এ সময় নদে থাকা ভাঙা ডিঙি নৌকায় করে নদের মাঝ বরাবর গিয়ে গোসলের জন্য ঝাঁপ দেয়। এর কিছুক্ষণ পরই ইয়াছিন পানিতে তলিয়ে যায়। পরে সঙ্গে থাকা বন্ধুরা স্থানীয়দের জানালে তারা নদে তল্লাশি শুরু করে। পরে বেলাব ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হলে স্টেশন অফিসার ইয়াছিন ইকবালের নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিকভাবে নদে তল্লাশি করে।
এ সময় শিশুটির খোঁজ না পেয়ে গাজীপুর জেলার টঙ্গীর ডুবুরি দলকে খবর দেয়া হয়। বিকাল সাড়ে ৪টায় ৪ সদস্যের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে নদে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। তারা নদের বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে শিশুটির সন্ধান না পেয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় অভিযান বন্ধ করে। পরবর্তীতে রোববার সকাল সাড়ে ৭টায় ডুবুরি দল দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান শুরু করে। এদিন সারাদিন নদের বিভিন্ন জায়গায় সন্ধান করেও শিশুটির সন্ধান পাইনি। পরে তারা রাত সাড়ে ৮টার দিকে উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করে।
সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় মাঝিরা নদে একটি শিশুর লাশ ভাসতে দেখে। পরে তারা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে সাড়ে ৬টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে ২৫০-৩০০ হাত দূরে নদ থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। শিশুটির লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে এলাকার মানুষ নদের ঘাটে ভিড় জমায়। এ সময় স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বেলাব ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ইয়াছিন ইকবাল বলেন, আমরা ডুবুরি দলের পাশাপাশি নৌকা দিয়েও সন্ধান চালিয়েছি। কিন্তু কোনোভাবেই সন্ধান পাওয়া যায়নি। দুই দিন পর মরদেহ ভেসে ওঠার সম্ভাবনা থাকে এজন্য রাতে অভিযান সমাপ্ত করা হয়। পরে সকালে খবর পেয়ে হাঁটু সমান পানি থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে মরদেহ হস্তান্তর করেছি।