মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর অনেক নিদর্শন ছড়িয়ে রয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এমনি একটি দর্শনীয় স্থান ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বারোবাজার। কালের বিবর্তনে টিকে থাকার পাশাপাশি গৌরবভরে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে এখানকার কীর্তিগুলো। এগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি গোড়ার মসজিদ। এ বিষয়ে জানাচ্ছেন মো. হাসানুজ্জামান পিয়াস
এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ এটি। বড় গম্বুজের পাশে তিনটি ছোট গম্বুজ দেখা যায়। গোড়ার মসজিদের আকৃতি বর্গাকার।
মসজিদের পুবে রয়েছে একটি বড় পুকুর। পুকুরটির নাম গোড়ার পুকুর। পুকুরে ঘাট থাকলেও তা প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। ১৯৮৩ সালে প্রতœতত্তে¡র সন্ধানে বারোবাজারে খননকাজ শুরু হয়। মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকা গোড়ার মসজিদসহ বেশ কিছু মসজিদ আবিষ্কৃত হয়। মসজিদগুলো প্রতœতত্ত¡ অধিদফতরের তালিকাভুক্ত করা হয়। মসজিদটি আবিষ্কারের পর এর পাশে একটি কবর স্থানীয় লোকজন খুঁজে পান। ধারণা করা হচ্ছে, কবরটি গোরাই নামের একজন সুফি দরবেশের। তাই তার নামানুসারে মসজিদটির নামকরণ হয় গোরার বা গোড়ার মসজিদ।
মসজিটির দেওয়ালে নানা আকৃতির নকশা পাওয়া যায়। মেহরাবগুলোয় পোড়ামাটির ফলকে ফল ও নানা ধরনের লতাপাতার চিত্রও চোখে পড়ে। এছাড়া বাইরের দেওয়াল পোড়ামাটির কারুকাজে চমৎকারভাবে অলংকৃত। মসজিদটি মুসলিম স্থাপত্যের এক নয়নাভিরাম ও অনন্য উদাহরণ। ধারণা করা হয়, এ মসজিদটি হোসেন শাহ বা তার ছেলে নসরত শাহের শাসনামলে নির্মাণ করা হয়।
গোড়ার মসজিদটি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নের বেলাট দৌলতপুর মৌজায় অবস্থিত। রাজধানী থেকে খুব সহজে এখানে যাওয়া যায়। যশোর থেকে বারোবাজারের দূরত্ব ১৭ কিলোমিটার। রাজধানী থেকে বিভিন্ন পরিবহনের এসি ও নন-এসি বাসে চড়ে সরাসরি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় পৌঁছানো সম্ভব। ঝিনাইদহ হয়ে কালীগঞ্জ যাওয়ার দূরপাল্লার বাসের মধ্যে রয়েছে ঝিনাইদহ লাইন, দর্শনা ডিলাক্স, চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স, রয়েল ও সোনার তরী। চাইলে ট্রেন কিংবা বিমানযোগেও যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে যশোর নামতে হবে। যশোর থেকে সরাসরি বাস বা সিএনজি অটোরিকশায় বারোবাজার যেতে পারেন।
Add Comment