গ্যাস্ট্রিকের কারণ ও প্রতিকার

পাকস্থলীতে আলসার বা গ্যাস্ট্রিকের জন্য বর্তমানে যে জীবাণুটিকে দায়ী করা হয় তার নাম হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি। এই ব্যাকটেরিয়াটি পাকস্থলীকে বেড়ে ওঠার সুযোগ পায়। পাকস্থলীর ক্যান্সারের জন্যও অনেকাংশে দায়ী এই ব্যাকটেরিয়া। ধারণা করা হয়, ‘ও’ ব্লাড গ্রুপধারীরা অন্যদের তুলনায় গ্যাস্ট্রিকে বেশি আক্রান্ত হন।

 

যেভাবে ছড়ায়

ব্যাকটেরিয়াটি সাধারণত ঘিঞ্জি এলাকায় বাস করে এমন মানুষের মধ্যে বেশি ছড়ায়। একজনের মুখ থেকে অন্যজনের মুখে যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে মুখ ও পায়ুপথে ছড়াতে পারে। তবে মানুষের মলমূত্র, পানি, খাবার ও অন্য কোনো প্রাণীতে এ জীবাণুর অস্তিত্ব এখনও প্রমাণিত হয়নি।

রোগের লক্ষণ

প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো উপসর্গ নাও থাকতে পারে। প্রধান উপসর্গগুলো হচ্ছে বমি বমি ভাব, বমি, বুকজ্বালা ও নাভির ওপরে পেটব্যথা। ব্যাকটেরিয়াটি পাকস্থলী ও তার ওপরের অংশ ডিওডেনামে আলসার বা ক্ষতের সৃষ্টি করে। ফলে পেটের ভেতরে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

 

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

পাকস্থলী ও ডিওডেনামে হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি দিয়ে আলসার হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করার জন্য এন্ডোসকোপিক বায়োপসি বা ইউরিয়া ব্রেদটেস্ট করা হয়। যদি জীবাণুটিকে ধরা যায় তবে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর, যেমন ওমিপ্রাজল ও দুটি অ্যান্টিবায়োটিক যেমন ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন ও মেট্রোনিডাজল দিয়ে একসঙ্গে নির্দিষ্ট সময় ধরে চিকিৎসা করলে অসুখ ভালো হয়ে যায়। এ পদ্ধতিকে বলে ট্রিপল থেরাপি।

 

জটিলতা

যেহেতু আলসার হলে পেটে রক্তক্ষরণ হয়, তাই এ রক্ত পায়খানার সঙ্গে বেরিয়ে আসে। এই কালো রক্তযুক্ত পায়খানাকে বলে ‘মেলেনা’। এ অবস্থা চলতে থাকলে রোগীর মারাত্মক রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া পাকস্থলীর শেষ প্রান্ত সংকুচিত হয়ে খাবার চলাচলে বাধার সৃষ্টি করে।

 

ডা. এমএ হালিম খান

মেডিসিন বিভাগ, বিএসএমএমইউ

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০