গ্যাস সরবরাহে এখনও ঘাটতি চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক দশকের বেশি সময় ধরে দেশে গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে সামঞ্জস্য নেই। বর্তমানে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা আনুমানিক ৩৮০ কোটি ঘনফুট। যদিও স্বাভাবিক সময়ে ২৮০ থেকে ৩০০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে ১০০ কোটি ঘনঘুট আসে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) থেকে। তবে এলএনজি রিগ্যাসিফিকেশনের ভাসমান টার্মিনাল অকেজো হওয়ায় সারাদেশে গ্যাস সরবরাহে ধস নামে। পুরো চট্টগ্রাম গ্যাসশূন্য হয়ে পড়ে।

দুটি ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট বা এফএসআরইউয়ের মধ্যে সংস্কারজনিত কারণে একটি নভেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। অন্যটি কারিগরি ত্রুটির কারণে গত বৃহস্পতিবার বন্ধ হয়ে গেলে গ্যাস সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। শুক্রবার গ্যাস সরবরাহ নামে প্রায় ২০৫ কোটি ঘনফুটে। আর বন্ধ হওয়ার আগের দিন ১৭ জানুয়ারি দেশে গ্যাস সরবরাহ ছিল ২৫২ কোটি ২৬ লাখ ঘনফুট।

এদিকে শুক্রবার রাত থেকে সীমিত আকারে এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়। এতে চট্টগ্রামে কিছুটা গ্যাস সরবরাহ বাড়ে। তবে কারিগরি ত্রুটি পুরোটা ঠিক না হওয়ায় দ্বিতীয় এলএনজি টার্মিনালটি এখনও পুরোপুরি গ্যাস সরবরাহ শুরু করতে পারেনি। এতে ২১ জানুয়ারি গ্যাস সরবরাহ দাঁড়ায় ২৩২ কোটি ১৯ লাখ ঘনফুট। অর্থাৎ মোট চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ ঘাটতি এখনও রয়ে গেছে।

সরবরাহ ঘাটতির কারণে একদিকে শিল্প খাত ও আবাসিকে গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম গ্যাস পাওয়ায় লোডশেডিংও বেড়ে গেছে। গতকাল বিদ্যুৎ খাতে গ্যাস সরবরাহ করা হয় ৬৪ কোটি ২২ লাখ ঘনফুট। যদিও এ খাতে সর্বোচ্চ চাহিদা ২২৪ কোটি ঘনফুট। তবে দ্বিতীয় এলএনজি টার্মিনালটি বন্ধ হওয়ার আগে বিদ্যুৎ খাতে গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছিল ৮২ দশমিক ৩১ কোটি ঘনফুট।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শীতে বিদ্যুৎ  উৎপাদন কম হচ্ছে। তাই এ খাতে গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহ দুটোই কম। কিন্তু এলএনজি বন্ধ হওয়ায় সরবরাহ আরও কমে গেছে। এতে দেশব্যাপী লোডশেডিং শুরু হয়েছে। গত শনিবার সর্বোচ্চ ৭৬৫ মেগাওয়াট লোডশেডিংয়ের ধারা গতকালও অব্যাহত ছিল। তবে গতকাল সর্বোচ্চ লোডশেডিং বেড়ে দাঁড়ায় ৮০৮ মেগাওয়াট।

গ্রীষ্মে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদার সময় দৈনিক ১১০ থেকে ১১২ কোটি ঘনফুট পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে এ খাতে। এখন দিনে সরবরাহ করা হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ কোটি ঘনফুট। তবে সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। গতকাল এ খাতে ১৩ কোটি ৬৯ লাখ ঘনফুট সরবরাহ করা হয়েছে। যদিও চাহিদা রয়েছে সর্বোচ্চ ৩২ কোটি ৯০ লাখ ঘনফুট। সংকটের কারণে তিনটি সার কারখানা গতকাল বন্ধ ছিল।

অন্যদিকে সরবরাহ হ্রাসে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শিল্প ও আবাসিক গ্রাহকরা। অনেক শিল্প-কারখানায় গ্যাস সংকটে উৎপাদন অর্ধেকে নেমেছে। আবাসিকেও রান্নার জন্য বিকল্প খুঁজছেন ভুক্তভোগীরা। পাইপলাইনে গ্যাস না থাকায় আবাসিক গ্রাহকদের অনেকে বাধ্য হয়ে এলপিজি সিলিন্ডার, ইলেকট্রিক চুলা ও লাকড়ির চুলা ব্যবহার করছেন।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০