গ্রামীণফোন শেয়ার প্রতি ১৩ টাকা লভ্যাংশ দেবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত গ্রামীণফোনের (জিপি) পরিচালনা পর্ষদ ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত সময়ের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১৩০ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা লভ্যাংশ হিসেবে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে নগদ ১৩ টাকা করে পাবেন।

কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সভা শেষে প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

লভ্যাংশ পাওয়ার যোগ্য বিনিয়োগকারী নির্বাচনে রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ আগস্ট। অর্থাৎ ৫ আগস্ট যেসব বিনিয়োগকারীর কাছে কোম্পানিটির শেয়ার থাকবে তারাই লভ্যাংশ পাবেন।

ডিএসই জানিয়েছে, লভ্যাংশ ঘোষণার কারণে আজ কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে কোনো সার্কিট ব্রেকার থাকবে না। অর্থাৎ শেয়ার দাম যত খুশি বাড়তে পারবে। তবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নির্ধারিত সীমার নিচে শেয়ার দাম নামতে পারবে না।

এদিকে লভ্যাংশ ঘোষণার পাশাপাশি কোম্পানিটি চলতি বছরের এপ্রিল-জুন সময়ে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল-জুন সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৫ টাকা ৩৮ পয়সা। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৭ টাকা ৭ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় শেয়ারপ্রতি মুনাফা কমেছে ১ টাকা ৬৯ পয়সা।

মুনাফা কমলেও কোম্পানিটির সম্পদমূল্য বেড়েছে। চলতি বছরের জুন শেষে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৩৭ টাকা ৭০ পয়সা, যা ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে ছিল ২৮ টাকা ৪০ পয়সা।

এদিকে অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো’র তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে শেয়ারপ্রতি পরিচালন নগদপ্রবাহ বা অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ১৩ পয়সা। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২০ টাকা ৯৪ পয়সা।

গ্রামীণফোনের রাজস্ব আয় কমেছে ৮%

অপরদিকে, চলতি বছরের এপ্রিল-জুন সময়ে গ্রামীণফোনের রাজস্ব আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮ শতাংশের বেশি কমেছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সময়ে গ্রামীণফোনের রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৩০৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা, যা আগের বছর এসময় ছিল ৩ হাজার ৬০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা।

করোনাভাইরাস মহামারি, নিয়ন্ত্রণী বিধিনিষেধ ও বৈরী আবহাওয়াকে রাজস্ব আয় কমার কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে গ্রামীণফোনের এক বিজ্ঞপ্তিতে। আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, এই তিন মাসে গ্রামীণ ফোনের করপরবর্তী মুনাফা কমেছে প্রায় ২৪ শতাংশ।

এপ্রিল-জুন সময়ে অপারেটরটি নিট মুনাফা হয়েছে ৭২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার, যা আগের বছর একই সময় ছিল ৯৫৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা।গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, চার মাস ধরে নজিরবিহীন বৈশ্বিক মহামারী কাজের ধরনের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। কাজের ধরন থেকে শুরু করে গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হয়েছে। কভিড-১৯ এর সাথে বৈরী আবহাওয়া ও রেগুলেটরি বাস্তবতার কারণে গত বছরের তুলনায় ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রাজস্ব অর্জনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

গ্রামীনফোনের সিএফও ইয়েন্স বেকার বলেন, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইন্টারনেট সেবায় প্রবৃদ্ধি ঠিক থাকলেও রাজস্ব অর্জন ও নেটওয়ার্কে গ্রাহক সংখ্যায় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখেছি।

গ্রামীণফোনের এখন মোট গ্রাহক সংখ্যা ৭ কোটি ৪৫ লাখ, যার মধ্যে ৪ কোটি ৮ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোন নেটওয়ার্ক উন্নয়নে ২৫০ কোটি টাকা এবং সরকারের কোষাগারে কর, ডিউটি, ফিস ও স্পেকটার্ম চার্জ বাবদ মোট রাজস্বের ৬৭ শতাংশ বা ৪ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা জমা দিয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০