Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 11:30 pm

গ্রাহকের সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তিতে আদায়ে জোর দিতে নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মামলায় বিপুল অঙ্কের অর্থ বছরের পর বছর আটকে রয়েছে। তাই এসব মামলাধীন খেলাপি ঋণ শুধু মামলা করে নয়, গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তিতে আদায়ে জোর দিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

গতকাল সোমবার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মামলাধীন ঋণের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে একটি পর্যালোচনা সভা হয়। ওই সভায় এ নির্দেশনা দেয়া হয়। তিন মাস পরপর এ সভা আয়োজন করা হয়।

সভার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মামলাধীন ঋণের অগ্রগতি নিয়ে এটা নিয়মিত একটা মিটিং। মামলাধীন ঋণ কোন পর্যায় আছে, নিষ্পত্তি হচ্ছে না কেন, কীভাবে আরও বেগবান করা যায় এবং কীভাবে খেলাপি ঋণ আদায় করা যায়Ñএসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আমাদের ফলাফল ভালো আসছে। সব ব্যাংক মামলাধীন ঋণ কমানোর জন্য সক্রিয়। অর্থঋণ আদালতের মাধ্যমে রিকভারি বাড়ছে। ব্যাংকগুলোকে সক্রিয় করতে প্রতি ত্রৈমাসিক এ মিটিং করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ব্যাংক ইচ্ছা করলে মামলাধীন ঋণের অর্থ আদায় করতে পারবে না, কারণ কোর্টের বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। এ ধাপ বা প্রক্রিয়াগুলোকে কীভাবে মনিটরিং করা যায়, সে বিষয়ে তাদের বলা হয়েছে। কোর্টে মামলা চলছে, কিন্তু ব্যাংক ও গ্রাহকদের সম্পর্কের ভিত্তিতে আদায় হয়ে যায়, তাহলে সে মামলাগুলো নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। সে চেষ্টা করা হচ্ছে। সেভাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আদায়ে জোর দিতে বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, ঋণ আদায়ের জন্য মামলা করা হলেও অর্থঋণ আদালতে বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যেই সময়ক্ষেপণের সুযোগ রয়েছে। এ আদালতে রায় হওয়ার পরও খেলাপি গ্রাহকরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। বছরের পর বছর পার হলেও সেই প্রক্রিয়া শেষ হয় না। এজন্য দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির জন্য আদালতের সংখ্যা বাড়াতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে অর্থঋণ আদালতে ৭২ হাজার ১৮৯টি বিচারাধীন মামলার বিপরীতে আটকে আছে এক লাখ ৬৬ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা। বিচারাধীন এসব মামলায় আদায় হয়েছে মাত্র পাঁচ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। ২০২১ সাল শেষে অর্থঋণ আদালতে ৬৮ হাজার ২৭১টি বিচারাধীন মামলার বিপরীতে আটকে ছিল এক লাখ ৪৩ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকা। বিচারাধীন এসব মামলায় ওই সময় আদায় হয়েছে মাত্র চার হাজার ৬১০ কোটি টাকা।

অপরদিকে ২০২২ সাল শেষে দেশের ৩৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চার হাজার ৭০২টি মামলার বিপরীতে ১১ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা আটকে রয়েছে আদালতে, যা ২০২১ সাল শেষে ছিল তিন হাজার ৯১৯টি মামলার বিপরীতে আট হাজার ৫১৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মামলা বেড়েছে ৭৮৩টি। এসব মামলার বিপরীতে গত এক বছরে তিন হাজার ৩৪ কোটি টাকার দাবি বেড়েছে।