Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 5:05 am

ঘন কুয়াশায় ঢাকা পঞ্চগড় বইছে হিমেল হাওয়া

প্রতিনিধি, পঞ্চগড় : শীত মৌসুমে দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত সোমবার দিবাগত রাত থেকে গতকাল সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল পঞ্চগড়। ভোর ৬টায় ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলেও সকাল ৯টায় ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ। তবে গত বছর ডিসেম্বরে এ সময়ে ৮-এর ঘরে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর এখন পর্যন্ত এ অঞ্চলে ১০-এর নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড হতে দেখা যায়নি।

এদিকে তাপমাত্রা ১০-এর নিচে না নামলেও তীব্র শীত অনুভব হচ্ছে এ জেলায়। বিকাল ৪টার পর থেকেই বইতে থাকে উত্তরের হিমেল হাওয়া। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর্যন্ত জেলা জুড়ে কুয়াশা আর শিশির ঝরতে দেখা যায়। গ্রামে শহরের হাটবাজারগুলোয় খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে। শীতবস্ত্রের অভাবে নি¤œবিত্তরা ফুটপাত থেকে গরম কাপড় কিনতে ভিড় করছে।

কনকনে শীতের কারণে বিপাকে পড়েছে বিভিন্ন শ্রেণির খেটে খাওয়া মানুষ। তবে পেটের তাগিদে কাউকে নদীতে পাথর তুলতে, কাউকে চা-বাগানে আবার কাউকে দিনমজুরের কাজ করতে যেতে দেখা গেছে। 

চা-শ্রমিক আনোয়ার হোসেন ও জাহেরুল ইসলাম জানান, সকালে প্রচণ্ড শীত অনুভূত হচ্ছে। কনকনে শীতের কারণে চা বাগানে কাজ করতে গেলে চা পাতা বরফের মতো লাগে। বাগানের পাতা তুলতে গিয়ে হাত-পা অবশ হয়ে আসে। তারপরও কাজ করতে হচ্ছে।

নারী পাথর শ্রমিক কদবানু ও জমিলাসহ কয়েকজন জানান, আমরা ফজরের আজানের পরপরই ঘুম থেকে উঠি। কদিন ধরে খুব ঠাণ্ডা। ভোরে উঠে ঘরের মেঝে, আসবাবপত্র সব বরফের মতো লাগে। তারপরও কাজ শেষ করে পেটের দায়ে পাথরের কাজে যেতে হচ্ছে।

অটোরিকশা চালক আব্দুল করিম ও শাহ আলম জানান, একদিকে তীব্র শীত, আরেকদিকে ঘন কুয়াশা। গাড়ি চালানো কষ্টকর হয়ে উঠেছে। যাত্রীও মিলছে না। আয়-রোজগার কমে গেছে। আগের তুলনায় তেমন ভাড়া হচ্ছে না।

এদিকে দিন ও রাতে তাপমাত্রা দুই রকম থাকায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন সকাল থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।

চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে রোগীর চাপ বেড়েছে। এমনিতে শীত মৌসুমে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় বাতাসে জীবাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়। শীতজনিত রোগ হিসেবে সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট বেশি হয়ে থাকে। আর শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তাই এ সময়টায় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে পারলে কিছুটা হলেও সুরক্ষা মিলবে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। আজ মঙ্গলবার সকালে ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ভোর ৬টায় রেকর্ড করা হয়েছিল ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বছর আজকের দিনে তাপমাত্রা সর্বনিন্ম ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল।