ঘাড়ব্যথায় করণীয়

ঘাড়ব্যথা একটি পরিচিত সমস্যা। যেকোনো বয়সী যে কারও এ সমস্যা হতে পারে। কেউ অল্প সময়, আবার কেউ দীর্ঘ সময় এতে ভোগেন। কারও বিশ্রাম নিলে ব্যথা কমে, আবার কারও ব্যথা এত তীব্র হয় যে মাথা চারদিকে নড়াচড়া করতে সমস্যা হয়। কখনও ঘাড়ব্যথার সঙ্গে হাত ও কাঁধ শিনশিন করে।

কারণ: খুলির নিচ থেকে মেরুদণ্ডের ওপরের সাতটি হাড়ের সমন্বয়ে গঠিত অংশকে বলা হয় সারভাইক্যাল রিজিয়ন। এ রিজিয়নে থাকা সাতটি কশেরুকার সঙ্গে কিছু লিগামেন্ট, পেশি, নার্ভ ইত্যাদি সংযুক্ত থাকে। ঘাড়ের যেকোনো ইনজুরির কারণে অথবা মাংসপেশির অতিরিক্ত টানে কিংবা ঘাড়ের হাড়ক্ষয়ের কারণে এসব জায়গায় সমস্যা হতে পারে। সেখান থেকে ব্যথাও অনুভূত হয়।

যেভাবে হতে পারে: ঘাড় অথবা কাঁধের মাংসপেশি দুর্বল হলে ব্যথা হতে পারে। লিগামেন্ট ইনজুরি, ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্কের সমস্যায় হতে পারে। ভুল অবস্থানে (পজিশন) অথবা দীর্ঘক্ষণ একই অবস্থানে বসে থাকলে। একই অবস্থানে কম্পিউটার বা মোবাইল দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে। মাথায় কিংবা বাঁ কাঁধে অতিরিক্ত ভারী কিছু বহন করলে। ভ্রমণ করার সময় পেছন থেকে ধাক্কা লাগলে। উচ্চ বা নি¤œ রক্তচাপ। হাড়ের ক্ষয়জনিত রোগ। বাতরোগ, যেমন রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস। মেরুদণ্ডের সমস্যা, যেমন সারভাইক্যাল স্পন্ডালাইসিস, সারভাইক্যাল ডিস্ক প্রলাপ্স প্রভৃতি সমস্যায় ঘাড়ব্যথা হতে পারে।

করণীয়: দীর্ঘ সময় একই অবস্থানে থেকে ঝুঁকে কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। নরম ও নিচু বালিশে ঘুমান। মাথায় ও কাঁধে ভারী কিছু বহন করা থেকে বিরত থাকুন। প্রয়োজন অনুযায়ী বিশ্রাম নিন। সতর্ক থাকতে হবে যেন কোনোভাবে ঘাড়ে ধাক্কা না লাগে। ব্যথার জন্য ঘাড়ে কোনো ধরনের মালিশ করা যাবে না। একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম করা যেতে পারে। দরকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করুন। ঘাড়ে কুসুম গরম পানির সেঁক নিলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। যাদের কাজের প্রয়োজনে সামনের দিকে ঝুঁকতে হয়, তারা ঘাড়ের সাপোর্ট হিসেবে সারভাইক্যাল কলার ব্যবহার করতে পারেন। ভুল দেহভঙ্গির কারণে হলে তা সংশোধনে ব্যথা কমে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সার্জারির প্রয়োজন হয়।

মো. সাইদুর রহমান

চিফ কনসালট্যান্ট (ফিজিও)

রিঅ্যাকটিভ ফিজিওথেরাপি সেন্টার, তেজগাঁও, ঢাকা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০