Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 8:55 pm

ঘাড়ব্যথার চিকিৎসা

ঘাড়ে যেকোনো বয়সেই ব্যথা হতে পারে। কারও অল্প সময়ের জন্য হয়, কারও থাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য। বিশ্রাম নিলে কারও ব্যথা কমে যায়। আবার কারও তো কমেই না, বরং হাতে বা পিঠেও ছড়িয়ে পড়ে। কখনও কখনও ঘাড়ের ব্যথার কারণে মাথা নাড়াচাড়া করতেও সমস্যা হয়।

মাথার নিচ থেকে মেরুদণ্ডের ওপরের সাতটি হাড়ের সমন্বয়ে গঠিত অংশকে সারভাইক্যাল রিজিওন বলে। এই সারভাইক্যাল রিজিওনে সাতটি কশেরুকা আছে। তার সঙ্গে কিছু লিগামেন্ট ও পেশি থাকে, যা ঘাড় ও মাথাকে সংযুক্ত করে। ঘাড়ের যেকোনো আঘাতে অথবা মাংসপেশির অতিরিক্ত টানের কারণে কিংবা ঘাড়ের হাড় ক্ষয় হওয়ার কারণে ব্যথা অনুভূত হয়।

ঘাড়ব্যথায় পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। ঘাড়ব্যথার সাধারণ কারণ হলো ঘাড় অথবা কাঁধের মাংসপেশির দুর্বলতা, ভুল দেহভঙ্গি অথবা দীর্ঘক্ষণ একই দেহভঙ্গিতে বসে থাকা, লিগামেন্টে আঘাত প্রভৃতি। ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্কের সমস্যার কারণে, মাথা বা কাঁধে অতিরিক্ত ভারী কিছু বহন করলে, দীর্ঘদিন একই অবস্থানে কম্পিউটার ও মুঠোফোন ব্যবহার করলে, ভ্রমণের সময় পেছন থেকে ধাক্কা লাগলে ঘাড়ব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া উচ্চ বা নিম্ন রক্তচাপের কারণে কিংবা হাড়ের ক্ষয়ের কারণে ব্যথা হতে পারে। হাড়ের সন্ধির রোগ, যেমন রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, সারভাইক্যাল স্পন্ডিলসিস, সারভাইক্যাল ডিস্ক প্রল্যাপস প্রভৃতি কারণেও ঘাড়ব্যথা হতে পারে।

সাবধানতা: দীর্ঘক্ষণ একইভাবে ঝুঁকে কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ঘুমানোর সময় নরম ও নিচু বালিশ ব্যবহার করতে হবে। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করতে হবে। মাথায় ও কাঁধে ভারী কিছু বহন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী বিশ্রাম নিতে হবে। ভ্রমণের সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন ঘাড়ে কোনো ধরনের ধাক্কা না লাগে। নরম বিছানা ও উঁচু বালিশে শুয়ে দীর্ঘক্ষণ থাকা যাবে না। ঘাড়ব্যথার চিকিৎসার জন্য ঘাড়ে কোনো ধরনের ম্যাসাজ বা মালিশ করা যাবে না।

ঘাড়ে বা কাঁধে ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। ঘাড়ে কুসুম গরম পানির সেঁক নিলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। যাদের কাজের প্রয়োজনে সামনের দিকে ঝুঁকতে হয়, তাঁরা ঘাড়ের সাপোর্ট হিসেবে সার্ভাইক্যাল কলার ব্যবহার করতে পারেন। ভুল দেহভঙ্গির কারণে ব্যথা হলে তা সংশোধন করতে হবে। একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। ব্যথার ধরন অনুযায়ী কিছু ফিজিক্যাল ও রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসা করা যেতে পারে।

মো. সাইদুর রহমান

চিফ কনসালট্যান্ট (ফিজিওথেরাপি), রিঅ্যাকটিভ, ফিজিওথেরাপি সেন্টার