ঘুমের মধ্যে পায়ের নড়াচড়া

অনেকেই আছেন ঘুমুতে গেলে পায়ে চুলকানি, পিন ফোটানো বা কোনো কিছু হাঁটছে বলে অনুভব করেন। ফলে বারবার পা চুলকাতে বা নড়াচড়া করতে থাকেন। ঘুমে চোখ একটু বন্ধ হয়ে এলেই শুরু হয় একই অনুভূতি। ঘুম থেকে জেগে আবার শুরু হয় পা ঝাড়া-মোছা। এমন করতে করতেই কারও কারও রাত কেটে যায়। কারও আবার এসব লক্ষণ অল্প অনুভূত হয়।

সাধারণত রাতে ঘুমুতে গেলে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। এটাকে বলে রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম। এটি এক ধরনের স্নায়ুরোগ। ঘুমের সমস্যাজনিত রোগও বলা যেতে পারে। সাধারণত মাঝবয়সীরা এ রোগে বেশি ভোগেন। এর মধ্যে নারীরা বেশি আক্রান্ত হন।

কী কারণে এ রোগ দেখা দেয় তার কারণ জানা যায়নি। তবে এ রোগে আক্রান্তের অর্ধেকেরই পরিবারে কেউ না কেউ একই সমস্যায় ভোগেন। গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু কারণে এ রোগের প্রকোপ বাড়ে বা রোগটি দেখা দিতে পারে। যেমন আয়রনের অভাবজনিত রক্তস্বল্পতা, ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা, পারকিনসন ডিজিজ, পেরিফেরা নিউরোপ্যাথি রোগ ইত্যাদি। কিছু ওষুধ যেমনÑবমি, মানসিক অবসাদ ও সর্দি-কাশির ওষুধ সেবনে এমনটা হতে পারে। তবে ওষুধ বন্ধ করে দিলে এ সমস্যার সমাধান হয়। কারও কারও গর্ভধারণের শেষ তিন মাস এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রসবের এক মাসের মধ্যে সাধারণত তা ভালো হয়ে যায়। মদ্যপানেও হতে পারে রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম। যদি এমন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যান।

শুরুতেই ওষুধ সেবনে না গিয়ে জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন, যেমনÑনির্দিষ্ট সময়ে ঘুমের অভ্যাস, চা-কফি ও ধূমপান-মদ্যপান পরিহার, নিয়মিত ব্যায়াম, পায়ের ম্যাসাজ, পায়ে গরম বা ঠাণ্ডা সেক দেয়ার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা যেতে পারে।

অনেকেই দুশ্চিন্তায় ভোগেন। তাদের স্ট্রেসমুক্ত জীবনে অভ্যস্ত হতে হবে। প্রয়োজনে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। দেখা গেছে, মানসিক সমস্যা কমে যাওয়ার পর অনেকের এ ধরনের অসুবিধা কেটে যায়। যদি এত কিছুর পরও আপনি সমস্যামুক্ত না হন তাহলে ওষুধ সেবন করতে হবে। এ রোগের বেশ কয়েক ধরনের চিকিৎসা রয়েছে। চিকিৎসকই জানিয়ে দেবেন আপনার জন্য কোনটা কার্যকর।

ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু

সহকারী অধ্যাপক

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস (নিনস)

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০