পাহাড় বেয়ে নেমে আসা স্বচ্ছ জলরাশির টানে বিছানাকান্দির দিকে ছুটছে পর্যটক। ঘুরে এসে জানাচ্ছেন
খন্দকার মাহমুদুল হাসান: ঘুরে বেড়ানো মানুষের শখ। হোক তা দেশে কিংবা বিদেশে। এতে দর্শনীয় স্থানের পাশাপাশি যোগাযোগ বাড়ে নানা মানুষের সঙ্গে। ভারী হয় অভিজ্ঞতার পাল্লা। যানবাহন, ধুলোবালি, কোলাহলপূর্ণ নাগরিক জীবন ও রুটিনমাফিক কর্মকাণ্ডে যাদের একঘেয়েমি এসে গেছেÑএ লেখা তাদের জন্য। একটু স্বস্তি পেতে পরিবার-পরিজন বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। এতে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি তো হবেই, ফিরে পাবেন সতেজতাও। কাজে মনোযোগ বাড়াতে ভ্রমণের গুরুত্ব অনেক। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কোথায় বেড়াতে যাবেন? বলছি তবে। নজরকাড়া এমন এক ঠিকানা সিলেটের বিছানাকান্দি।
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত ঘেঁষে বিছানাকান্দির অবস্থান। সুন্দর প্রাকৃতিক এ স্থান স্থানীয়ভাবে ‘বিসনাকান্দি’ নামে পরিচিত। সীমান্তে পাহাড়ঘেরা সবুজ অরণ্যের বুক চিরে ভারত থেকে নেমে আসা পানির ঢল আর বড় বড় পাথরÑএই দুইয়ে মিলে বিছানাকান্দির সৌন্দর্যকে করেছে মনোমুগ্ধকর। এখানকার স্বচ্ছ আর হিম-শীতল ঠাণ্ডা পানি, পানির শব্দ একরকম মাদকতা সৃষ্টি করে।
বিছানাকান্দিতে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় বর্ষাকাল। শীতে জলধারা ক্ষীণ হলেও সৌন্দর্য কমে না কিঞ্চিত। চাইলে এখনই বেড়িয়ে পড়তে পারেন বিছানাকান্দির উদ্দেশে। এখানে স্থানীয়দের পেশা নদী থেকে পাথর বা বালু উত্তোলন। তাদের প্রধান বাহন নৌকা। নৌকা চালানো অন্যতম পেশা। বিছানাকান্দির মূল পয়েন্টে পর্যটকের জন্য রেস্টুরেন্ট ও ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান আছে।
তবে সুন্দরের মাঝে ভয়ও আছে। অনবরত বয়ে চলা পানিতে পাথরের গায়ে শ্যাওলা জমায় পাথরগুলো খুব পিচ্ছিল। এ জন্য বেশ কিছু দুর্ঘটনাও ঘটেছে। তাই পানিতে নামার সময় একটু সতর্ক না হলে যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। সাঁতার না জানলে একা একা পানিতে না নেমে দলবদ্ধভাবে নামাই ভালো। নিরাপত্তার খাতিরে এটুকু সতর্কতা মেনে নিতে চাইবেন যে কেউ।
বাংলাদেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে প্রথমে সিলেটের আম্বরখানা পয়েন্টে আসতে হবে। সেখান থেকে বিছানাকান্দি যাওয়ার সিএনজি অটোরিকশা ও লেগুনা পাওয়া যায়। রিজার্ভ করে নিলে আসা-যাওয়া ভাড়া নেবে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। সিএনজি অটো বা লেগুনা থামবে পীরেরবাজার বা হাদারপাড় বাজারে। সেখানে সব সময় বিছানাকান্দি যাওয়ার ছোট-বড় নৌকা পাওয়া যায়। নৌকায় করে বিছানাকান্দির মূল জায়গায় পৌঁছাতে সময় লাগবে ৩০-৪০ মিনিট। নৌকা ভাড়া নেবে ৭০০ থেকে ১৪০০ টাকা।
Add Comment