ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে এইচএসবিসি  

 

শেয়ার বিজ ডেস্ক : খরা কাটিয়ে উঠেছে বহুজাতিক ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এইচএসবিসি ব্যাংক। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্রিটেনভিত্তিক ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনের (এইচএসবিসি) মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে পাঁচ শতাংশ। প্রতিবেদন প্রকাশের সঙ্গে আরও ২০০ কোটি ডলারের শেয়ার বাইব্যাক করার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গত বছর মুনাফায় ধসের পর প্রথমার্ধের এ ফলকে ঘুরে দাঁড়ানোর অংশ মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। খবর এএফপি।

তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির কর-পূর্ববর্তী মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় পাঁচ শতাংশ বেড়ে ১০ দশমিক দুই বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। গত বছর প্রথম ছয় মাসে এ মুনাফা ছিল ৯ দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার।

সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করা শেয়ার  কোম্পানি কর্তৃক পুনঃক্রয় হচ্ছে বাইব্যাক। চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধের মধ্যে নতুন ২০০ কোটি ডলারের শেয়ার পুনঃক্রয় সম্পন্ন করবে এইচএসবি।

মূলত ২০০৮ সালে অর্থনৈতিক সংকটের পর থেকে এইচএসবিসি মন্দায় পড়ে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের হাজার হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করে। এছাড়া ঘুরে দাঁড়াতে কিছু সম্পদ বিক্রিও করে।

এদিকে মুনাফা বৃদ্ধির খবরে গতকাল এইচএসবিসির শেয়ারদর দুই দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়ে যায়। লেনদেনের শেষদিকে শেয়ারপ্রতি দাম ৭৮ দশমিক ৫৫ ডলারে পৌঁছায়।

এইচএসবিসির অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রথম ছয় মাসে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালন ব্যয় ১২ শতাংশ কমে ১৬ দশমিক চার বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। খরচ কমাতে প্রতিষ্ঠানটি ব্রাজিলের ইউনিট বিক্রি করায় এ ব্যয় হ্রাস পেয়েছে বলে বলা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডগলাস ফ্লিন্ট এ মুনাফাকে ‘খুবই আনন্দদায়ক’ বলেছেন। তিনি বলেন, ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্রিটেনের অস্পষ্ট ভবিষ্যৎ এবং ভূরাজনৈতিক অস্থিরতায় এখনও অনিশ্চয়তা কাজ করছে। তবে অর্থবার্ষিক ফল সন্তোষজনক।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মুনাফার এ ফল পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে গেছে। হংকংভিত্তিক কিংস্টন সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক ডিকি ওয়াং বলেন, এইচএসবিসির প্রথম ছয় মাসের ফল অবশ্যই বাজার প্রত্যাশার চেয়ে ভালো।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রথমার্ধে প্রতিষ্ঠানটির নিট আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ বেড়ে ছয় দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। গত বছর প্রথমার্ধে নিট আয় হয়েছিল ছয় দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার।

এছাড়া দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) এইচএসবিসির কর-পূর্ববর্তী মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এক দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার বেড়ে পাঁচ দশমিক তিন বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ব্ল–মবার্গের বিশ্লেষকরা চার দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলার মুনাফার পূর্বাভাস দিয়েছিল।

গত বছর মুনাফা ধসের পর ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে এইচএসবিসির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মার্ক টুকার। বর্তমানে তিনি এশিয়ান ইন্সুরার এআইএ গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আগামী ১ অক্টোবর টুকার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। তিনি ২০১০ সাল থেকে এ পদে দায়িত্ব পালন করা ডগলাস ফ্লিন্টের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

গত বছর নিট মুনাফায় ৮২ শতাংশ পতন দেখেছে এইচএসবিসি ব্যাংক। এ পতনের পরই ব্যাংকটির পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।

তবে ওই সময় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০১৬ সালে বিশ্বব্যাপী ঘটে যাওয়া অপ্রত্যাশিত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ঘটনাবলির প্রভাবে তাদের নিট মুনাফায় পতন দেখা দেয়।

এইচএসবিসি ইউরোপের বৃহত্তম ব্যাংক। তবে এশিয়া অঞ্চল থেকেই ব্যাংকটি সবচেয়ে বেশি মুনাফা করে। মুনাফায় ধস থেকে ঘুরে দাঁড়াতে ব্যাংকটি চেষ্টা করে যাচ্ছে।

গত ছয় বছরে এইচএসবিসি ৪০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে এবং তাদের অনেক শাখা বন্ধ করে দিয়েছে।

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০