মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: দীর্ঘ মন্দার পর দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর সূচক আশানুরূপভাবে বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর। বেড়েছে ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সব খাতের শেয়ারের দর। ফলে প্রত্যাশা বেড়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবার। তাদের প্রত্যাশা এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
গতকাল সকাল থেকেই বাড়তে থাকে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর। যে কারণে ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতার সংখ্যা বেশি পরিলক্ষিত হয়। ফলে দর বাড়তে থাকে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের। যে কারণে দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ১০৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে পাঁচ হাজার ৫৯৭ পয়েন্টে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বললে বাজার-সংশ্লিষ্টরা বলেন, বাজারের প্রায় সব কোম্পানিই এখন বিনিয়োগের অনুকূলে রয়েছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর গড় পিই বা শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত রয়েছে ২০-এর নিচে। পুঁজিবাজারের চালিকা শক্তি হিসেবে ব্যাংক খাতের পিই রেশিও রয়েছে ১০-এর নিয়ে। ব্যাকরণসম্মত এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা নিরাপদ। তারা মনে করেন গতকাল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও বেড়েছে। যে কারণে বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এ পরিস্থিতি বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলে আশা করছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি কয়েকটি ইস্যুতে বাজারের পতন হয়। এর মধ্যে রাজনৈতিক, কৌশলগত বিনিয়োগকারীসহ আরও কয়েকটি কারণ রয়েছে। তবে এসব ইস্যুতে বাজার পতন হতে পারে বলে মনে করি না। বাজার পতনের সব কারণ হচ্ছে মনোগত। পেনিক সেল বেড়ে যাওয়ায় এ পতন হয়েছে। তবে এখন যে পরিস্থিতি এ পরিস্থিতিতে অচিরেই বাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
একই বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ শেয়ার বিজকে বলেন, বাজারে এখন অধিকাংশ শেয়ারই ক্রয়যোগ্য। তারপর বাজারের পতন একটি অস্বাভাবিক ঘটনা। এখান থেকে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর বিকল্প নেই। তিনি বলেন, বাজার পতনের কয়েকটি কারণ থাকলেও মূল কারণ বিনিয়োগকারীদের ভীতি। ভয় না পেয়ে তাদের ভালো শেয়ারের সঙ্গে থেকে অপেক্ষা করা উচিত। তাহলে বাজারও ঘুরে দাঁড়াবে তাদের পুঁজিও নিরাপদে থাকবে।
প্রসঙ্গত, পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন থেকে দরপতন চলছে। প্রতিদিনই পোর্টফোলিও থেকে পুঁজি উধাও হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। নতুন বছরে ডিএসইর প্রধান সূচকের পতন হয়েছে ৭৫৬ পয়েন্ট। আর বাজার মূলধন কমেছে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। সব খাতের শেয়ারের একযোগে দরপতন হয়ে এখন বাজার পরিস্থিতি নাজুক। এ পরিস্থিতিতে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর বিকল্প নেই বলে প্রত্যাশা সবার।
নতুন বছরের লেনদেন চিত্রে দেখা যায় জানুয়ারির প্রথম দিনে ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ছয় হাজার ৪৫৪ পয়েন্টে। ফেব্রুয়ারির প্রথম কার্যদিবসে সূচকের অবস্থান হয় ছয় হাজার ২১ পয়েন্ট। আর বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর আগে সর্বশেষ অর্থাৎ ২৮ মার্চ সূচকের অবস্থান ছিল পাঁচ হাজার ৪৮৮ পয়েন্টে।