রুবাইয়াত রিক্তা: ঢাকার পুঁজিবাজারে গতকাল সূচক সামান্য কমলেও লেনদেন বেড়েছে ৪৯ কোটি টাকা। যৌক্তিক সংশোধনের পর লেনদেন বেড়েছে ব্যাংক খাতে। বিনিয়োগকারীরা ফের ঝুঁকেছেন এ খাতে। গতকাল ব্যাংক খাতের ৫৩ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে। আগের দিনের তুলনায় এ খাতে লেনদেন বেড়েছে ৩৯ কোটি টাকা। সংশোধনের পর ফের ব্যাংক খাতে বিনিয়োগ বাড়াকে স্বাভাবিক মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্ট অনেকেই। তাদের মতে, ২০১০ সালে এ খাতের অনেক শেয়ারের দর ৩০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। এরপর গত সাত বছরে সেগুলোর দর সাত টাকায় নেমে এসেছিল। তাই এখন এসব শেয়ারের দর ১৫-১৬ টাকা হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। ব্যাংক খাতের অনেক শেয়ারের দর আরও বাড়ার সুযোগ রয়েছে। তবে এ খাতে কিছু দুর্বল কোম্পানি রয়েছে, সেগুলোর দর বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। গতকাল ব্যাংকের পাশাপাশি ইতিবাচক ছিল আর্থিক খাত। এ খাতে আগের দিনের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে পাঁচ কোটি টাকা। গতকাল এ খাতের ৫৬ শতাংশ শেয়ারের দর ইতিবাচক ছিল। ব্যাংক খাতের বৃদ্ধি সূচকের বড় ধরনের পতন ঠেকিয়েছে। গতকাল শতভাগ ইতিবাচক ছিল তথ্য ও প্রযুক্তি খাত। এ খাতের সাত কোম্পানির দর বেড়েছে। আমরা টেক দরবৃদ্ধির শীর্ষ দুইয়ে অবস্থান করে। বস্ত্র খাতের ৭২ শতাংশ কোম্পানি দর হারিয়েছে। অন্যদিকে পাট খাত এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে শতভাগ কোম্পানি ছিল দরপতনে।
টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে ছিল ব্যাংক খাতের প্রাধান্য। রূপালী, শাহজালাল ও পূবালী ব্যাংক ছিল শীর্ষ চারের মধ্যে। আর্থিক খাতের ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এবং আইপিডিসি দরবৃদ্ধির শীর্ষ দশে স্থান করে নেয়।
লেনদেনের নেতৃত্বে ছিল ব্যাংক, আর্থিক ও প্রকৌশল খাতের একাধিক কোম্পানি। শাহজালাল ব্যাংকের ৬৩ কোটি টাকা, আল-আরাফাহ্ ব্যাংক প্রায় ২৬ কোটি, লংকাবাংলা ২৩ কোটি, বিবিএস কেব্লস সাড়ে ২২ কোটি, এনবিএল প্রায় ২১ কোটি, উত্তরা ব্যাংক ২০ কোটি, ইফাদ অটোস ১৮ কোটি, এক্সিম ব্যাংক ১৬ কোটি এবং রূপালী ব্যাংকের সাড়ে ১৩ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
পুঁজিবাজার একটি খাতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে শক্তিশালী অবস্থানে যেতে পারে না। এজন্য সব খাতের ভালো-মন্দ কোম্পানির শেয়ারের দরে ভারসাম্য আনতে হবে। একটি খাতই শুধু বাড়বে আর অন্যান্য খাতের ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানি অবহেলায় পড়ে থাকলে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আসবে না। তাই বাজারকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যেতে হলে অবশ্যই সব খাতের ভালো কোম্পানির শেয়ার যেন যুক্তিসঙ্গত দরে লেনদেন হয় সে বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সচেতন হওয়ার পাশাপাশি নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারিও বাড়াতে হবে।
Add Comment